চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতির আগামী ৫ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কর্মবিরতি পালনের ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করেছে শিক্ষকদের একাংশ।
একাংশের শিক্ষকদের অভিযোগ, বর্তমান শিক্ষক সমিতি আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি তাদের নির্ধারিত এক বছরের দায়িত্ব শেষ করতে যাচ্ছে।
সোমবার (৫ ফ্রেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ (হলুদ দল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞাপ্তিতে এ দাবি করে।
কর্মবিরতি প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের (হলুদ দল) আহ্বায়ক প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ মামুন।
বিজ্ঞাপ্তিতে বলা হয়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির একাংশের সংবাদ সম্মেলন থেকে শিক্ষকদের কর্মবিরতি সম্পর্কিত যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আমরা তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। শিক্ষক সমিতি কোন সাধারণ সভা আহবান না করে, এমনকি সমিতির কার্যনির্বাহী পর্ষদের মতামত ছাড়া, একাংশের উদ্যোগে কর্মবিরতির মতো হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের 'আইনের শাসন' এবং 'ভাবমূর্তি রক্ষা'র নামে শিক্ষক সমিতির একাংশ স্বেচ্ছাচারীভাবে যে ধরণের কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে, তা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত ও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমরা মনে করি, শিক্ষকদের মূল কাজ হচ্ছে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান এবং শাস্ত্রীয় গবেষণা করা; সেই সাথে নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসমাপনে সক্রিয় ভূমিকা রাখা। এক্ষেত্রে কর্মবিরতির মত সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের দারুণভাবে হতাশ করবে এবং তাদের শিক্ষা কার্যক্রমকে চরমভাবে ব্যাহত করবে।
আমরা এটাও মনে করি যে, বর্তমান শিক্ষক সমিতি যেহেতু আগামী ৭ ফেব্রুয়ারী তাদের নির্ধারিত এক বছরের দায়িত্ব শেষ করতে যাচ্ছেন, সেহেতু তাদের পরবর্তী নির্বাচনের দিকে মনযোগ নিবন্ধ করা অধিকতর জরুরি ছিল। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, তারা পরিকল্পিতভাবে নিজস্ব কায়েমী স্বার্থ হাসিলের জন্য নির্বাচনকে প্রলম্বিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকদের মূল্যবান ভোটে নির্বাচিত শিক্ষক প্রতিনিধিদের একাংশের এধরণের কার্যকলাপ কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তারা যে ভাবমূর্তির বিষয়টি বারবার উচ্চারণ করছেন, আমরা মনে করি তাদের এধরণের কর্মকাণ্ডই সত্যিকার অর্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করছে। সেই সাথে তাদের নিজস্ব স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশন জটের আশংকাও সৃষ্টি করছেন। সর্বোপরি, তাদের আন্দোলনের পুরো সময়জুড়েই শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের বিষয়গুলো ক্রমাগতভাবে উপেক্ষিত হয়েছে।
উপর্যুক্ত বিষয়ের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন ও দায়িত্বশীল শিক্ষক হিসেবে সকলের প্রতি বিনীত অনুরোধ করছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক স্বার্থে আপনারা শিক্ষক সমিতির একাংশের এধরণের একপেশে, অযৌক্তিক ও হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে যার যার জায়গা থেকে ক্লাস-পরীক্ষা গ্রহণ করা এবং অন্যান্য পেশাগত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে শিক্ষার্থীদের প্রতি নিজেদের নৈতিক দায়িত্ব পালন করে যাবেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের শুভবুদ্ধি দিয়ে আমরা সকল অশুভ তৎপরতা রোধ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি রক্ষায় সচেষ্ট থাকব।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৪
এমআই/পিডি/টিসি