চট্টগ্রাম: বাঁশখালীর উপকূল জুড়ে লবণ উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। ছনুয়া, গন্ডামারা, সরল, পুঁইছড়ি, শেখেরখীল, পশ্চিম মনকিচরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ লবণ চাষে জড়িত।
গত মৌসুমে দেশে ৬২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লবণ উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)।
সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী আধুনিক পদ্ধতিতে লবণ চাষিদের অগ্রিম লবণ চাষে উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রশিক্ষণ, লবণ চাষের নতুন এলাকা চিহ্নিতকরণ এবং সম্প্রসারণ, সহজ শর্তে লবণ চাষিদের ঋণ প্রদান, একরপ্রতি লবণ উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ, প্রকৃত লবণ চাষিদের কাছে বরাদ্দকরণ, লবণ চাষের জমির লিজ মূল্য নির্ধারণ, লবণ চাষের জমি সংরক্ষণ, আধুনিক পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদনে প্রদর্শনী ও উৎপাদিত লবণের মান নিয়ন্ত্রণে কারিগরি সহায়তা প্রদান, জরিপ পরিচালনা, লবণ চাষ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ এবং লবণ উৎপাদন, মজুদ ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে নিয়মিতভাবে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
বাঁশখালীর লবণ চাষিরা জানান, নভেম্বর থেকে লবণ উৎপাদন শুরু হয়ে এপ্রিলের শেষ সময় পর্যন্ত চলে। এসময় বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। বর্ষায় উৎপাদিত লবণ মাঠেই গর্ত করে পুঁতে রাখতে হয়। এতে খরচ বাড়ে। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে লবণ ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রাম, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি দামে লবণ বিক্রি করা হয়। আগে সনাতন পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদন করা হতো। বর্তমানে পলিথিন পদ্ধতিতে লবণ চাষ করা হয়।
লবণ চাষি কামাল উদ্দিন বলেন, এক কানি জমিতে পলিথিন পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদন করছি। আগামী ছয় মাসে ৩০০ মণ লবণ পাওয়া যাবে। পলিথিন পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদনে সময় লাগে ৪ থেকে ৫ দিন। রোদ থাকলে তাড়াতাড়ি লবণ মিলে।
আরেক লবণ চাষি আবুল কালাম বলেন, এক কানি জমিতে ৫ হাজার টাকার পলিথিন, ৩৫ হাজার টাকার লাগিয়ত, ৫ হাজার টাকা স্কিম ও ৫ হাজার টাকার মজুরিসহ ৫০ হাজার টাকা খরচ করে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় হয়। গত বছর ৮ কানিতে খরচ বাদ দিয়ে প্রায় আড়াই লাখ টাকা লাভ হয়েছিল। শ্রমিকভেদে দিতে হয় ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা মজুরি।
বাঁশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু ছালেক জানান, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে লবণ উৎপাদন হয়। চাষিরা এসব লবণ পাইকারি ও খুচরা বাজারে বিক্রি করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৪
এসি/টিসি