চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে তৃতীয়বারের মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) উদ্দীপ্ত বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে 'উদ্দীপ্ত বই বিনিময় উৎসব'। এ উৎসবে অংশগ্রহনকারীকে একটি বইয়ের বিনিময়ে অন্য আরেকটি বই সংগ্রহের সুযোগ করে দেওয়া হয়।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে এই উৎসব শুরু হয়। উৎসবটি চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অনেক শিক্ষক এবং স্থানীয় স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বই বিনিময় করে পছন্দের বই সংগ্রহ করে।
উদ্দীপ্ত বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি হাসিবুল খান (হাসিব) বলেন, ইতিবাচক কাজের প্রচেষ্টা আমাদের সবসময়ই থাকে। সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করে যাচ্ছি। ভাষার মাসে বই বিনিময় উৎসব বেশ সাড়া পেয়েছি আমরা। সামনের দিনগুলোতে আরো ভালো কাজ করতে চাই। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই পড়ার উৎসাহ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আমাদের এ আয়োজন। অনেক শিক্ষার্থী আর্থিক সমস্যার কারণে বেশি সংখ্যক বই কিনতে পারে না। সেসব শিক্ষার্থী তার পঠিত বই বিনিময়ের মাধ্যমে অন্য বিভিন্ন বই সংগ্রহ করে পড়ার সুযোগ পায়, সে লক্ষ্যকে প্রাধান্য দিয়ে এই উৎসবের আয়োজন।
বই-বিনিময় অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক জিয়াউদ্দিন সায়েম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই পাঠে আগ্রহসৃষ্টি এবং বই পড়ার প্রবণতা ছড়িয়ে দিতেই এমন আয়োজন। পাশাপাশি আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও আর্থিক সমস্যার কারণে যেসব শিক্ষার্থী পাঠ্যক্রমের বাইরের বই সংগ্রহ করতে পারছে না, তাদের জন্যই সার্বজনীন এই উৎসবের আয়োজন।
বই-বিনিময়ে উৎসবে অংশগ্রহণকারী লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী অতসী বলেন, গতবার আমি ছয়টি বই দিয়েছিলাম। এবার দিয়েছি তিনটি। এবছর যেগুলো নিচ্ছি, পরের বছর অন্য কোন বইয়ের সাথে এগুলো বিনিময় করতে পারবো। বিষয়টা অনেক ইন্টারেস্টিং।
উদ্দীপ্ত বাংলাদেশের উপ অর্থ সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী শারমিন বলেন, তেত্রিশটি বই দিয়েছি। খুব বেশি নিবো না। বন্ধুবান্ধব বই হাতে নিয়ে দেখছে, পড়তে চাচ্ছে, এতেই খুব খুশি খুশি লাগছে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বই-বিনিময় উৎসব আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব লিপি আক্তার সূচনা, যুগ্ম আহবায়ক বিনয় সূত্রধর, সদস্য সুসান্না, শ্যামা, ফেরদৌস, সালমান,আশিক, ইফসান, ফারিশা, হালিমা, সাবিত, মুজাহিদ, নাজমুল, তানজিনা, ক্যামেলিয়া, নাইমা, শিমু, মুসকান, শরীফ, মুজাহিদ, মুনসুরসহ আরো অনেকে।
উল্লেখ্য, উদ্দীপ্ত বাংলাদেশ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। যেটি মূলত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের নিয়ে কাজ করে। তাদের জীবনমান উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানকল্পে নানাবিধ উদ্যোগ, (গবাদিপশু উপহার, সেলাই মেশিন, খাদ্যসামগ্রী বিতরণ), সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কর্মসূচি, রক্তদান, বৃক্ষরোপণ, শীতবস্ত্র ও ইদবস্ত্র বিতরণ, দুর্যোগে ত্রাণ সহায়তা, পরিচ্ছন্নতা অভিযান, শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ও কাউন্সিলিং, ভর্তি ও পরিক্ষায় ফরম পূরনে আর্থিক সহায়তা, বইমেলা, বই বিনিময় উৎসব, বিনামূল্যে পাঠদান ও শিক্ষাসামগ্রী বিতরণসহ নানাবিধ বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৪
এমএ/পিডি/টিসি