ঢাকা, বুধবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পাহাড়ের কাঁঠালে সয়লাব নগরের বাজার

সোহেল সরওয়ার, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৮ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৪
পাহাড়ের কাঁঠালে সয়লাব নগরের বাজার ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: ‘মধুমাস’ নামে খ্যাত জ্যৈষ্ঠ, এ মাসেই পাহাড়ের কাঁঠাল আসে নগরে। ফলমণ্ডি এলাকায় কাঁঠালের ম-ম গন্ধ।

বিক্রেতার হাঁকডাক, চলছে ক্রেতার দামাদামি। ফলের আড়তে স্তরে স্তরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে নানান আকারের কাঁঠাল।
 

দোকানের বাইরে উন্মুক্ত জায়গা ও ফুটপাতেও রয়েছে কাঁঠালের বিশাল স্তূপ। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরুতেই বাজারে সরবরাহ বেড়েছে এই ফলের। আকার ও মানভেদে খুচরা মূল্যে প্রতিটি কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।  

কাঁঠাল ব্যবসায়ী জাকারিয়া সিকদার (৩৬) বলেন, পার্বত্য এলাকায় প্রতিটি কাঁঠালের গড়মূল্য ৭০ টাকা হিসাবে প্রতি বড় ট্রাকে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার কাঁঠাল ভর্তি করা যায়। পরে শহরে নিয়ে বিক্রি করে লাভ থাকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা।  

সমতলে রয়েছে সুমিষ্ট পাহাড়ি কাঁঠালের চাহিদা। খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি, গুইমারা, রামগড়, মাটিরাঙ্গা, দীঘিনালা, পানছড়ি উপজেলায় কাঁঠালের ভালো ফলন হয়েছে। এসব উপজেলায় উৎপাদিত কাঁঠাল বেচাকেনার হাট দীঘিনালা, মাটিরাঙ্গা, গুইমারা, মানিকছড়ির তিনটহরী ও চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার হেঁয়াকো বাজার। রাঙামাটি থেকেও নগরে আসছে কাঁঠাল।

বহদ্দারহাট এলাকার ফল ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম বলেন, মানিকছড়ি থেকে কাঁঠাল এনে বহদ্দারহাটে বিক্রি করি। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফলের সরবরাহ বেড়েছে। ফলের দাম রোদ-বৃষ্টির ওপরও নির্ভর করে। বৃষ্টি পড়লে মানুষ কাঁঠাল খেতে চায়, তাই চাহিদা বেশি থাকার কারণে দামও এই সময় বেশি থাকে। আবার গরম বেশি পড়লে মানুষ তেমন কাঁঠাল খেতে চায় না, তাই দামও কমে যায়।

ফটিকছড়ি উপজেলার হেঁয়াকো বাজারের কাঁঠাল ব্যবসায়ী মো. আবদুল মতিন বলেন, এই বাজার সমতল এলাকায় হলেও এখানে বসে পাহাড়ি এলাকার রসাল ফলের বাজার। পুরো মৌসুমে এখান থেকে দৈনিক ৯০-১০০ ট্রাক কাঁঠাল শহরে যায়।  

ফল কিনতে চকবাজার এসেছেন চাকরিজীবী মো. রাশেদ। তিনি বলেন, বাজারে বিভিন্ন ধরনের গ্রীষ্মকালীন ফল আসায় বাচ্চারা এসব খাওয়ার আবদার করে। আম-লিচুর সঙ্গে কাঁঠালও কিনেছি। মাঝারি আকারের একটি কাঁঠালের দাম নিয়েছে ১শ টাকা।

মাটিরাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী মো. বাবলু মিয়া বলেন, মাটিরাঙ্গা উপজেলার আট ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণ কাঁঠালের চাষ হয়। পুরো মৌসুমে এখান থেকে দৈনিক ১০০ ট্রাক কাঁঠাল সমতলে যায়।  

মানিকছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওঙ্কার বিশ্বাস বলেন, সমতলে পাহাড়ের রসালো ফলের কদর বেশি। কাঁঠালের মৌসুমে জেলার ৫-৬টি বাজার থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০০ ট্রাক কাঁঠাল সমতলে যায়।  

কাঁঠাল পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও বিভিন্ন ভিটামিন যা মানবদেহের জন্য বিশেষ প্রয়োজন। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা কাঁঠালে ১ দশমিক ৮ গ্রাম, কাঁচা কাঁঠালে ২০৬ গ্রাম ও কাঁঠালের বীজে ৬ দশমিক ৬ গ্রাম আমিষ পাওয়া যায়।  

কাঁচা কাঁঠাল রোগ-ব্যাধি উপশমে যেমন কার্যকর, অন্যদিকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয় অনেকগুণ। এটি ক্যান্সারের মোকাবিলায়ও সাহায্য করে। কাঁঠালে আছে শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট, যা আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ফ্রি-রেডিকেলস থেকে রক্ষা করে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৪ 
এসএস/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।