চট্টগ্রাম: নগরের কোতোয়ালী থানার সেন্ট স্কলাসটিকা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শিল্পী সেলিন কস্তাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে একই প্রতিষ্ঠানের ৪ শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন অধ্যক্ষ।
জিডিতে অভিযুক্ত করা হয়েছে, স্কুলের শিক্ষক শার্লিন সুবেরিত ইউজিন (৩৫), মাগ্রেট মনিকা জিন্স (৪০), নীল রাসেল সোহার (৫০) ও বেবি চন্দ্র (৪০)।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, স্কুলের সামগ্রিক বিষয়ে একটি তদন্ত কমিাটি গঠন করে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। ওই প্রতিবেদন তৈরির পর থেকে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিসাধনে তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে মর্মে অনুমান করায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিসাধন করার চেষ্টায় লিপ্ত আছে। গত ৩০ জুন দুপুরে অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে শিক্ষকদের সঙ্গে এক মিটিংয়ে ৪ জন শিক্ষক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বাতিল করাসহ অধ্যক্ষকে হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
এদিকে স্কুলের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়, গত ২৬ মে স্কুলের ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে অনৈতিক আচরণের অভিযোগ এনে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন অন্য ৪৭ জন শিক্ষক। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম আর্চ বিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদারের নির্দেশে অভিযোগটি তদন্তের জন্য ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেন অধ্যক্ষ শিল্পী সেলিন কস্তা। কমিটিতে সিন্টার বৃন্তা রেমাকে আহ্বায়ক, ব্রাদার রক্তিম চিরানকে প্রধান সমন্বয়কারী এবং প্রভাষক ওমর ফারুককে আইসিটি বিষয়ক সহায়তা প্রদানকারী হিসেবে সদস্য করা হয়। পরে তদন্ত কমিটি অভিযোগ উঠা দুই শিক্ষক ও এক শিক্ষার্থীর মোবাইল নম্বর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সটাগ্রাম, টিকটক, ফেসবুকসহ যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ, তাদের সাক্ষাৎকার নেন। পাশাপাশি অভিযোগ উঠা শিক্ষার্থীর ঘনিষ্ট বান্ধবীদের সাক্ষাৎকার নেন। সেইসঙ্গে অভিযোগকারী শিক্ষকদের কাছ থেকে তথ্য ও সাক্ষাৎকার নেন। একইভঅবে অভিভাবকদের কাছ থেকে সাক্ষাৎকার ও লিখিত ডকুমেন্টস নেয় কমিটি। তদন্তে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে, পাশাপাশি অভিযুক্ত শিক্ষার্থীসহ আরও কয়েক শিক্ষার্থীর ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ঘটনার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তাদের মধ্যে ১০ জন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করা হয়। অভিযুক্ত শিক্ষকদের মানহানি করে উনাদের চাকুরিচ্যুত করার প্রয়াশে হিংসার বশঃবর্তী হয়ে এই কর্মকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। একইসঙ্গে ঘটনায় জড়িত সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে। গত ৫ জুন অধ্যক্ষের কাছে সেই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা ১০ শিক্ষকের মধ্যে জিডিতে অভিযোগ উঠা ৪ জন শিক্ষকও রয়েছেন।
কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন কুমার দাশ বাংলানিউজকে বলেন, হত্যার হুমকির অভিযোগে সেন্ট স্কলাসটিকা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি জিডি করেছেন। জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। জিডি তদন্তের জন্য আদালতের অনুমতি লাগে, অনুমতির জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০২৪
এমআই/পিডি/টিসি