চট্টগ্রাম: নাশকতাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, এদের সমূলে উৎপাটন করার মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষিত করতে হবে। এদের দোসর, অর্থায়নকারী, সহায়তাকারীদেরও চিহ্নিত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) লালদীঘিপাড়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনে চসিক পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ দাবি জানান।
মেয়র বলেন, আমি কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকে মাঠে ছিলাম। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। শিক্ষার্থীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি দেশে নাশকতা চালিয়েছে। তাদের ষড়যন্ত্র টের পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরে গেছে। রাষ্ট্রও শিক্ষার্থীদের দাবি অনুসারে কোটা সংস্কারে পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে, নাশকতায় জড়িতরা যাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে শিক্ষকদের ভূমিকা রাখতে হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং করুন। অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলুন। সহকর্মীদের শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং করতে বলুন। শিক্ষার্থীরা যাতে স্বাধীনতাবিরোধীদের প্ররোচণায় নিজের সোনালি ভবিষ্যৎ ধ্বংস না করে সে ব্যাপারে শিক্ষকদের ভূমিকা রাখতে হবে। আমি মনে করি, বর্তমান পরিস্থিতির জন্য আমাদের সংস্কৃতি চর্চার ঘাটতি দায়ী। এজন্য প্রতি সপ্তাহে একাডেমিক কার্যক্রমের একটি অংশ রাখা উচিত শিশুদের সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে মানসিক বিকাশের জন্য।
মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত হওয়ার ক্ষোভ থেকে স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশে নাশকতা চালিয়েছে মন্তব্য করে মেয়র বলেন, এই কোটাবিরোধী আন্দোলন কাজে লাগিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশ ধ্বংসের রূপরেখা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়েছে। তারা বিভিন্ন সুযোগে নাশকতা চালিয়ে বাংলাদেশকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে চায়। মত-পথের পার্থক্য থাকবেই। সবাই আমার দল করবে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু দেশ তো সবার। নাহলে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে এমন সব স্থাপনায় হামলা কেন? নাশকতাকারীরা পুলিশ সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে। মুরাদপুরে ছয়তলা ভবন থেকে স্বাধীনতার পক্ষের ছাত্রদের নির্মমভাবে ফেলে হতাহত করেছে। ওরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও জনগণের স্বপ্নের স্থাপনাগুলো বেছে বেছে হামলা চালিয়েছে। এগুলো কি ছাত্ররা করেছে?
সভায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানান, আন্দোলনের কারণে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শিক্ষা কার্যক্রমের গতি বাড়াতে হবে, প্রয়োজনে বন্ধের দিনগুলোকেও কাজে লাগাতে হবে। শিক্ষক-ছাত্রদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সতর্কতা প্রয়োজন। কোনো ছাত্র সন্দেহজনক আচরণ করলে তাকে মনিটরিংয়ে রাখতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুললে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সঙ্গে বসে রাষ্ট্রবিরোধী যেকোনো অপপ্রচারের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে শিক্ষকদের। কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থী প্ররোচণামূলক কোনো কার্যক্রম চালালে তা প্রশাসনকে অবহিত করতে হবে। একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে দেশপ্রেম জাগিয়ে তুলতে হবে। শিক্ষার্থীদের জানাতে হবে মুক্তিযুদ্ধের সোনালি ইতিহাস।
সভায় চসিক সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন, প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০২৪
এআর/পিডি/টিসি