চট্টগ্রাম: বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে হাটহাজারী উপজেলায় কাজী মিরাজুল ইসলাম নামে এক মাদ্রাসাছাত্র গুলিতে নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
মামলায় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, চট্টগ্রাম জেলার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম রশিদুল হক, হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির প্রয়াত আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাসহ ৪১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার ইকবালের আদালতে মামলার আবেদন করেন নিহত ছাত্র কাজী মিরাজুল ইসলামের বাবা কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন।
অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন হাটহাজারী সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম,হাটহাজারী থানার সাবেক ওসি রফিকুল ইসলাম, পরিদর্শক রাজীব শর্মা, কেশব চক্রবর্তী, তৌহিদুল করিম (বর্তমানে নগরের চকবাজার থানার পরিদর্শক তদন্ত) ও আমির হোসেন, সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) মুকিব হাসান, কবির হোসেন ও জসীমউদ্দীন, পিবিআই এসআই শাহাদাত হোসেন, ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মুহুরী, হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদুল আলম ও ইউনুস গণি চৌধুরী, হাটহাজারী পৌরসভার সাবেক প্রশাসক মনজুরুল আলম চৌধুরী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নাসির হায়দার, হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মইনুদ্দিন রুহি। আনাস মাদানী হেফাজতের একাংশের নেতা। তৎকালীন আওয়ামী সরকারপন্থী হিসেবে পরিচিত।
বাদীর আইনজীবী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, সাড়ে তিন বছর আগে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে গুলিতে মাদ্রাসাছাত্র নিহতের ঘটনায় ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলার আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে মামলাটি হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মামলা হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২১ সালের ২৬ মার্চ। তাঁর আগমনের প্রতিবাদে সেদিন দুপুরে হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে মিছিল বের করেছিলেন হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। সেখানে গুলিতে মাদ্রাসার ৪ ছাত্র নিহত হন। পরে হাটহাজারী থানা, ভূমি অফিস ও সরকারি ডাকবাংলোয় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় হেফাজতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৯টি মামলা হয়। মামলাগুলো এখনো তদন্তাধীন।
এর আগে বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, চট্টগ্রাম জেলার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম রশিদুল হক, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা, হেফাজতে ইসলামের সাবেক নেতাসহ ২৮ জনকে আসামি করে একই ঘটনায় মাদ্রাসাছাত্র রফিকুল ইসলাম নিহতের ঘটনায় মামলা করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৪
এমআই/টিসি