চট্টগ্রাম: নজরকাড়া সব মাটির জিনিস। ফুলদানি, ব্যাংক, জগ, গ্লাস, প্লেট, হাঁড়ি-পাতিল কী নেই! নানা বয়সী মানুষের ভিড় মৃৎশিল্প সামগ্রীর স্টলে।
নগরের কাজীর দেউড়ির পুরোনো সার্কিট হাউসের সামনের চত্বরে বিজয় মেলার চিত্র এটি।
কথা হয় ‘চাঁদপুর মৃৎশিল্প’ নামের স্টলের মোহাম্মদ মোশাররফের সঙ্গে। তিনি বলেন, অল্প সময়ের মেলা, মাত্র ছয় দিন। তাই ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। অনেকে ভিড় এড়ানোর জন্য সুবিধাজনক সময়ে কেনাকাটা সারতে আসছেন সপরিবারে। আশাকরি, ভালো বিক্রি হবে।
গৃহিণী রোকসানা খাতুন পছন্দ করেন মাটির তৈরি দৃষ্টিনন্দন টব। দরদাম করে ৫০০ টাকায় কিনে নেন একটি। তিনি জানান, জব্বারের বলীখেলার মেলা আর বিজয় মেলা আমাদের ঐতিহ্য। সমস্যা হচ্ছে বলীখেলার মেলার নির্দিষ্ট তারিখ আছে। সারা দেশের কুটির শিল্প, গৃহস্থালি সামগ্রী ওই মেলায় পাওয়া যায়। বিজয় মেলা হতো বিজয় দিবসকে ঘিরে আউটার স্টেডিয়ামে। গত বছর সম্ভবত হয়নি। তারিখও নির্দিষ্ট নেই। এবারও প্রথমে আউটার স্টেডিয়াম, পরে সিআরবিতে হবে শুনেছিলাম। অবশেষে যেখানে মেলার সূচনা হয়েছিল সেখানে ফিরে এলো।
শতাধিক স্টল তৈরি হয়েছে বিজয় মেলায়। বেশিরভাগ স্টলে পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। অনেক তরুণ শখের বশে দোকান দিয়েছেন মেলায়। সবার আশা ভালো বিক্রি হবে।
প্রথম দিন সন্ধ্যাতেই জমজমাট ছিল ঢাকাইয়া কাবাব অ্যান্ড ফুড ভ্যালির স্টলটি। যদিও স্টেডিয়াম পাড়ায় বেশ কিছু ভালো রেস্টুরেন্ট এবং স্ট্রিট ফুড থাকায় মেলায় আসা দর্শক ক্রেতাদের খাবারের দাম, মান নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না।
মেলায় মেয়েদের বাহারি ওড়না বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, প্লাস্টিকের খেলনা প্রতিটি ১২০ টাকা ও হাত ব্যাগ ২৫০ টাকা।
চট্টগ্রামে মেলা হবে আর রুহানি আচার থাকবে না তা তো হয় না। হ্যাঁ মেলার পূর্বপ্রান্তে দেখা গেল সেই আচারের স্টলটি। টক ঝাল মিষ্টি স্বাদের আচারপ্রেমীরা ঢু মারছেন সেই স্টলে। মুড়ি, মুড়কি, তিলের খাজা, গজা, বাতাসা, চনাচুর, বাদামভাজা, চটপটি, ফুচকা ইত্যাদি মুখরোচক খাবারের স্টলও আছে বেশ।
দক্ষিণ প্রান্তে দেখা গেল বগুড়ার দইঘর। মাটির হাঁড়ি, পাতিলে বিখ্যাত দই কিনতে ভিড় করছেন ভোজনরসিকরা।
বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের সদস্যসচিব আহমেদ নেওয়াজ বলেন, ১৯৮৯ সালে যেখানে বিজয় মেলা শুরু হয়েছিল সেখানে এবারের বিজয় মেলা উদ্বোধন হলো। বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীকের ইচ্ছায় এবারের মেলার আয়োজন। সরকার এ মেলা আয়োজনে আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে। এটা সবার মেলা, জনগণের মেলা। বায়ান্ন, ঊনসত্তর, একাত্তর, নব্বই, চব্বিশে কী হয়েছিল সেই বিষয়গুলো প্রজন্মকে জানানোর জন্য এ মেলার আয়োজন। এখানে আমাদের অনেক স্মৃতি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
এআর/টিসি