ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

বনগাঁও’র বাগদায় খুলনার চরমপন্থি শৈলেন গ্রেফতার

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০১২

বারাসাত : ৩২টি খুনের আসামি খুলনা অঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী ও চরমপন্থি সংগঠন নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির (মৃণাল) প্রধান শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস (৪৫) ওরফে প্রদীপের গ্রেফতারেরর খবর বাগদা থানা নিশ্চিত করেছে।

বাগদা থানা জানিয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্ত চৌগাছার বিপরীতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁও মহকুমার বাগদার কুড়লিয়া গ্রাম থেকে বুধবার তাকে গ্রেফতার করা হয়।



প্রথমে তার গ্রেফতারের খবর স্বীকার করা না হলেও বলা হয়, প্রদীপ বিশ্বাস বলে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে অবশ্য বৃহস্পতিবার সকালে বলা হয়, এই প্রদীপই খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী শৈলেন।

পুলিস জানিয়েছে, বাংলাদেশের নিষিদ্ধঘোষিত নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির (মৃণাল) প্রধান শৈলেন প্রায় ৫ বছর ধরে আত্মগোপন করে ছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্নস্থানে।
 
বুধবার তাকে গ্রেফতারের সময় যুক্তরাষ্ট্রে তৈরী একটি ৯ এমএম রিভলবার এবং ৮ রাউন্ড গুলি পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে কিছু কাগজপত্র জব্দ করা হয়। এগুলো দেখে পুলিশ নিশ্চিত- বড় ধরণের কোন নাশকতা ঘটাতে সে বাংলাদেশে যাচ্ছিল।
 
জানা গেছে, শৈলেন বিশ্বাস খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শলুয়া গ্রামের মৃত প্রেমচাঁদ বিশ্বাসের ছেলে। পেশায় তিনি মৎস্যজীবী। ১৯৯৪ সালে বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির মৃণালের হাত ধরে গাজী কামরুলের ক্যাডার হিসেবে সন্ত্রাসের পথে পা রাখেন তিনি।

২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর শৈলেন আবারও ভারতে পাড়ি জমান।

বাংলাদেশে বিএনপি জোট সরকারের সময় নদীয়ায় জেলার কৃষ্ণনগরে খামারবাড়িতে খুন হয়েছিলেন নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির (মৃণাল) প্রধান মৃণাল সরকার।

একইভাবে আরেক নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির (মৃণাল) শীর্ষ নেতা আলমগীর হোসেন আলমের গুলিবিদ্ধ দেহ পায় বনগাঁর মছলন্দপুরে। ওই দু‘জনই খুলনার শীর্ষ অপরাধী বলে চিহ্নিত। যৌথবাহিনীর অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে আত্মগোপন করে ছিল তারা।
 
জেলা পুলিস সূত্রে জানা গেছে, আগের খুনগুলোর সঙ্গেও শৈলেন জড়িত ছিল। নাম পরিবর্তন করে ‘প্রদীপ বিশ্বাস’ নামে কলকাতার অদূরে বিরাটিতে ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করত। শৈলেন অস্ত্র চালানোর ছিল সিদ্ধহস্ত। শার্পারকিলার বলে পরিচিত ছিল ঘনিষ্টমহলে।
 
নিষিদ্ধ ঘোষিত বামপন্থী দলটির শীর্ষ নেতা মৃণালের সহযোগী হলেও সীমান্তের এপার থেকে চাঁদাবাজি নিয়ে নিজেদের মধ্যে চরম বিরোধ শুরু হয়। তার পরিণতিতেই খুন হয় মৃণাল ও আলমগীর।
 
বাংলাদেশে তার বিপক্ষ দল ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিসের হাত থেকে বাঁচার জন্য শৈলেন এ বছর ২৯ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে ভুয়া খবর  ছড়ায় হাবড়া থানা পুলিশ অশোকনগর রেল লাইনের পাশ থেকে শৈলেনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে।

এই খবর তখন খুলনার আঞ্চলিক সংবাদপত্র ও জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত হয়।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালেই বনগাঁও মহকুমা আদালতে তুলে তাকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিস।

বাংলাদেশ সময় : ১১৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১২
আরডি,
সম্পাদনা : সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।