ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ছিটমহল বিনিময় দাবি, রেকর্ড ২৭ দিন অনশনে দীপ্তিমান

শিলিগুড়ি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০১২
ছিটমহল বিনিময় দাবি, রেকর্ড ২৭ দিন অনশনে দীপ্তিমান

শিলিগুড়ি: ছিটমহল বিনিময়ের দাবিতে রেকর্ড ২৭ দিন ধরে অনশন করছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার জেলার তরুণ দীপ্তিমান।

সেদিনের বিরোধী দলনেত্রী আজকের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বামফ্রন্টের অপশাসনের প্রতিবাদে কলকাতা মেট্রো চ্যানেলে ২৬ দিন ধরে অনশন করেছিলেন।

সেদিন তার চারপাশে ছিল দেশি-বিদেশি মিডিয়া, রাজনৈতিক নেতাদের ভীড়। আর ছিটমহল বিনিময়ের দাবিতে দীপ্তিমান প্রায় নীরবে কোচবিহারের দিনহাটা হাসপাতালের বেডে শুয়ে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। শনিবার তার অনশনের ২৭ দিন। তবে তার চারপাশে নেই কোনো মিডিয়ার ভিড়। আসেননি কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। আর বলাই বাহুল্য এনিয়ে মাথাব্যথা নেই রাজ্য বা কেন্দ্রর, তাই তাদের তরফেও কেউ আসার প্রয়োজন বোধ করেননি।

গত ১২ মার্চ থেকে ছিটমহল বিনিময়সহ আটটি দাবি সামনে রেখে কোচবিহার জেলার দিনহাটা শহরের সংহতি ময়দানে আমরণ অনশন বসেছিলেন বাংলাদেশি ছিটমহলের ৮ প্রবীণ বাসীন্দাসহ দীপ্তিমান।

এক সপ্তাহ পরে ওই আট প্রবীণ অসুস্থ হয়ে পড়লে, কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক সি মরুগান সংহতি ময়দানের অনশনস্থলে গিয়ে অনুরোধ করেন অনশন তুলে নিতে। বাকিরা অনশন তুলে নিলেও দীপ্তিমান অনশন চালিয়ে যান।

২২ দিন ধরে একটানা আমরণ অনশন করে শেষ পর্যন্ত ব্যাপক অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ২ এপ্রিল প্রায়  জোর করেই সংগঠনের কর্মীরা চিকিৎসকদের পরামর্শে দিনহাটা হাসপাতালে ভর্তি করেন ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সহ-সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্তকে।

কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হয়েও অনশন ভাঙেননি তিনি। শত অনুরোধেও তাকে একদানা খাবার খাওয়ানো যায়নি তাকে বলে বাংলানিউজকে জানালেন দীপ্তিমানের আন্দোলনের সর্বক্ষণের সঙ্গী অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব।

শনিবার সকালে হাসপাতালের বেডে শুয়ে দীপ্তিমান ক্ষীণ কণ্ঠে বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি এখানে আসতে চাইনি। আমাকে ওরা জোর করে নিয়ে এলো। আমার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে যদি ছিটমহলবাসীর মুক্তি পেত, তাহলে সেই মৃত্যু আমার কাছে আনন্দময়। আমি এর শেষ দেখতে চাই। ’

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, একটানা ২৭ দিন অনশন করে মৃত্যুর মুখে পৌঁছে যাওয়া দীপ্তিমানের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে একবারও আসেননি রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারেরর কোন প্রতিনিধি।

এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ ছিটমহলবাসী। সমন্বয় কমিটির নেতা অ্যাডভোকেট আহাসান হাবিব বলেন, প্রশাসন থেকে রাজ্য, কেন্দ্র একাধিক চিঠি পাঠিয়ে কোনো ফল হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর দুবার উত্তরবঙ্গ সফরে এলে চিঠি দিয়েও তার সঙ্গে দেখা করা যায়নি।

তিনি বলেন, ‘জনগণনা হয়েছে। জমির হিসাবের সঙ্গে তো মানুষের হিসাব রয়েছে। দার্জিলিংয়ের মোর্চা নেতাদের মহাকরণে ডাকা হচ্ছে। সেখানে আমরা কী অন্যায় করলাম? আমাদের ডাকা হচ্ছে না। ’

ক্ষুব্ধ আহসান হাবিব বলেন, ‘ওর অবস্থা ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। শুধুমাত্র স্যালাইন ছাড়া আর অন্য কোনো  কিছুই নিচ্ছে না। ডাক্তার বলছে এভাবে চললে বড় কোন দুঘর্টনা ঘটতে পারে যে কোনো মূহুর্তে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১২
আরডি/
সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।