কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোটে জোট ভেঙে একলা লড়াইয়ে নামতে পারে প্রদেশ কংগ্রেস। প্রদেশ নেতৃত্বের বক্তব্য থেকে শনিবার এমন ইঙ্গিতই মিলেছে।
রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের মতে, ওই ভোটকে সামনে রেখেই দলকে রাজ্যে শক্তিশালী করা সম্ভব৷ সে কারণেই শনিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে ভবিষ্যত রণকৌশল চূড়ান্ত করে কংগ্রেস৷
গত বিধানসভা ভোটে জোট বেঁধে লড়ে সিপিএম তথা বামফ্রন্টকে ক্ষমতাছাড়া করেছে তৃণমূল ও কংগ্রেস। এর পর কিছুদিন কাটতে না কাটতেই একাধিক ইস্যুতে জোটের মধ্যেই শুরু হয়ে যায় প্রকাশ্য সংঘাত।
পঞ্চায়েতে নির্বাচনে কংগ্রেসের একলা চলার ইঙ্গিত সে সম্পর্ককে আরো তিক্ত করে তুলবে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে শনিবার ডাকা হয়েছিল কার্যকরী সমিতির বৈঠক৷ সাংসদ, বিধায়ক থেকে জেলা সভাপতি, প্রত্যেকেই যোগ দিয়েছিলেন ওই বৈঠকে৷
পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে দলকে শক্তিশালী করে তোলার উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শনিবারের বৈঠকে৷ ঠিক হয়েছে, যে কোনো স্তরে পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় সরকারি হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করা হবে৷ প্রতিটি ব্লকে কমিটি গড়ে তোলা হবে৷
ব্লকে ব্লকে পঞ্চায়েতের কাজে কেন্দ্রের ভূমিকা এবং রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে রিপোর্ট দেবে ব্লক কমিটি৷ ব্লকে ব্লকে দলের অবস্থা বিশদে জানিয়ে কমিটিগুলোকে সাংগঠনিক রিপোর্টও জমা দিতে বলা হবে৷
প্রতিটি ব্লকে সম্মেলনের আয়োজন করবে প্রদেশ কংগ্রেস৷ পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে প্রচারে নামবে ব্লক কমিটিগুলো৷
প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের দাবি, রাজ্যের জোটে আছে বলেই সব মুখ বুজে সহ্য করবে না কংগ্রেস ৷ তিনি ঘোষণা দেন, পঞ্চায়েত ভোটেই তারা প্রমাণ করে দেবেন, এ রাজ্যে কংগ্রেস প্রকৃতই শক্তিশালী রাজনৈতিক দল৷
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, কংগ্রেসের সংগঠন যাতে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তোলা যায়, সেদিকে নজর দেওয়া হবে।
এর পাশাপাশি কংগ্রেস-তৃণমূল জোট নিয়েও তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, এই জোট থাকছে। তবে সরকারের ভুল নীতির সব সময় সমালোচনা করা হবে।
এদিকে মুশির্দবাদের জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা সাংসদ অধীর চৌধুরী কয়েকটি জেলায় জেলা পরিষদ বিষয়ে রাজ্য সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, নির্বাচিত জেলা পরিষদের ক্ষমতার নিয়ণ্ত্রণ রাজ্য সরকার নিজেদের হাতে নেওয়া ঠিক হয়নি। এটি স্থানীয় স্বায়ত্ত্বশাসন ব্যবস্থার ওপর সরকারি হস্তক্ষেপ।
তাই তৃণমূল যেখানে কেন্দ্রের নেওয়া কয়েকটি বিষয়কে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী বলে বিরোধিতা করছে, সেখানে এই রাজ্যে জেলা পরিষদের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে স্ববিরোধী কাজ করছে বলে তিনি জানান।
আর মুর্শিদাবাদে কয়েকজন পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ সদস্যের দলত্যাগ বিষয়ে তিনি জানান, ক্ষমতার লোভেই তারা দলত্যাগ করেছেন। আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না বলেই তারা এই পথ বেছে নিয়েছেন। তাদের চলে যাওয়ায় দলের সংগঠনিক শক্তির কোনো হেরফের হবে না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আর আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস একাই লড়বে বলেও তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১২
আরডি
সম্পাদনা: অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর