নয়াদিল্লি: একদিনের সফরে এসে রোববার ভারতের মানুষকে ধন্যবাদ জানালেন পাকি প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি।
এদিন তিনি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।
জারদারি বলেন, বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে। সমস্যা সমাধানে আমাদের পথ খুঁজতে হবে।
পরে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। আমাকে পাকিস্তানে সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দু’দেশের সুযোগ মত সময় বের করে পাকিস্তান সফরে যেতে পারলে আমার খুব ভালো লাগবে।
দিল্লির ৭ রেসকোর্সে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এই বৈঠক চলে প্রায় ১৫ মিনিট।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এদিনের বৈঠক ইসলামাবাদকে কড়া বার্তা দিয়েছেন মনমোহন।
হাফিজ সইদ সহ মুম্বাই সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এবিষয়ে ইসলামাবাদ কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, তার ওপরই নির্ভর করবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গতি-প্রকৃতি।
পাকি প্রেসিডেন্টের ভারত সফরের ঠিক আগেই মার্কিন প্রশাসন জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদের মাথার দাম ঘোষণা করায় কূটনীতির লড়াইয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছে যায় নয়াদিল্লি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই পরিস্থিতিতে সুযোগের সম্পূর্ণ সদব্যবহার করে পাকিস্তানকে কড়া বার্তাই দিলেন মনমোহন সিং।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারিকে তিনি বলেন, মুম্বাই সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের কাঠগড়ায় তুলতেই হবে পাকিস্তানকে। ভারত-বিরোধী সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তান কী ব্যবস্থা নিচ্ছে তার ওপরই ভারতীয়রা দু’দেশের সম্পর্ক বিচার করবেন।
পাকি প্রেসিডেন্টকে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে এই বার্তা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব রঞ্জন মাথাই।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে পাকিস্তান যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পাকি প্রেসিডেন্ট। ভারত প্রধানমন্ত্রী সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার পর তার পাকিস্তান সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হবে বলেই সূত্রে খবর।
এদিন বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ ৪০ জন প্রতিনিধি নিয়ে নয়াদিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছান পাকি প্রেসিডেন্ট। তার সঙ্গে রয়েছেন পাকিস্তানি অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী রেহমান মালিক, বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার, জারদারি পুত্র বিলাওয়াল জারদারি ভুট্টো, কন্যা আসিফা, উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।
এদিনের বৈঠকের পর মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন মনমোহন এবং জারদারি। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী পবন কুমার বনসল হাজির থাকবেন ভোজনপর্বে।
কংগ্রেস হাইকম্যান্ড সূত্রে খবর, মধ্যাহ্নভোজে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক রাহুল গান্ধী। ছিলেন না কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। বিকেলে সপারিষদ জারদারি উড়ে যান জয়পুরের উদ্দেশে। সেখানে আজমীর শরীফে খাজা মইনুদ্দিন চিস্তির দরগায় শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন তিনি।
পরে সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে ফিরে পাকিস্তানের বিমান ধরেন প্রেসিডেন্ট জারদারি।
জারদারি জন্য মধ্যাহ্নভোজের এলাহি আয়োজন
একদিনের ঝটিকা সফরে পাকি প্রেসিডেন্টের জন্য মধ্যাহ্নভোজে করা হলো এলাহি ব্যবস্থা। থাকলো আমিষ ও নিরামিষের হরেক রকম আয়োজন।
জানা গেছে, আমিষ মেনুর মধ্যে রয়েছে জেতুনি মুর্গ সিক, গোস্ত বরয়া কাবাব, মুর্গ কোফতা মখনি, করেলি ডাল পোস্ত, সিকন্দ্রী খুসক রান, কাচ্চি গোস্ত বিরিয়ানি। আমিষের মধ্যে থাকছে কোল্ড মেলন, মিন্ট সুপ, সবজি কাবাব, মশলা ধোসা, তোরি ভুজিয়া, পনীর জলফ্রেজি, ভিন্ডি করকুরি, মুগ ডাল তরকা প্রভৃতি।
এছাড়াও রয়েছে হরেক রকমের মিষ্টি। থাকছে ব্লুবেরি মুজ, গুড়ের সন্দেশ, ফিরনি। আর রয়েছে বিভিন্ন রকমের ফল এবং চা ও কফি।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১২
আরডি
সম্পাদনা: আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর