ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কলকাতার লিটল ম্যাগাজিন মেলায় বঙ্গবন্ধু

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৩
কলকাতার লিটল ম্যাগাজিন মেলায় বঙ্গবন্ধু

কলকাতা: কলকাতায় চলছে ভারতীয় উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ সাহিত্য উৎসব ও লিটল ম্যাগাজিন মেলা। রবীন্দ্রসদন প্রাঙ্গণের এ মেলায় অংশ নিয়েছেন ৫৫০ জন বাঙালি কবি সাহিত্যিক ও ৩৫০টি লিটল ম্যাগাজিন।

তবে বাংলাদেশ না থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য মেলায় বিরাজ করছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দুই বাংলার যৌথ উদ্যোগে এ ধরণের আয়োজন যদি হয়, তবে তা হবে বাঙালির গর্বের, এমনই মত ওপার বাংলার বিদ্বজনদের।
 
বাঙালির সাহিত্য উৎসব, আর তাতে বঙ্গবন্ধু থাকবেন না, তা কি হয়? আর তাই লিটল ম্যাগাজিন মেলায় শহরবাসীর নজর কাড়ছে  ‘চোখ’ পত্রিকার স্টল। মানিক সাহার আদ্যোপান্ত পশ্চিমবঙ্গবাসী হলেও বঙ্গবন্ধু-ই তার আদর্শ। আর তাই বঙ্গবন্ধু ও তার বাংলাদেশকে ভালোবেসে রেখেছেন বিভিন্ন ধরনের বই এবং ম্যাগাজিন।

মানিকের অভিমত, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় এখন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক কাজ হচ্ছে। তার পথপ্রদর্শক ছিল এই চোখ পত্রিকাই। আমাদের চোখ পত্রিকার আদর্শই হল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কাজ করা। শুধুমাত্র আমাদের স্টলেই দেখতে পাবেন বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত যে সমস্ত বই এবং পত্রিকা আছে সেগুলো আমরা প্রদর্শন করছি বা রেখে থাকি।  

তিনি আরও বলেন, ১৯৯৭ সালে প্রাবন্ধিক কবি অন্নদাশঙ্কর রায়ের সুপরামর্শে আমাদের বঙ্গবন্ধুর নামে পুরস্কারের একটা ভাবনা আসে। তিনি আমাদের বলেছিলেন, তোমরা বঙ্গবন্ধু পুরস্কার চালু কর। ২০০১ সাল থেকে ওনারই উপস্থিতিতে নিয়মিতভাবে প্রতিবছর আমরা বঙ্গবন্ধু পুরস্কার দুই বাংলার কবি সাহিত্যিক-সহ সমাজে বিভিন্ন অবদান রাখা ব্যাক্তিদের দিয়ে আসছি।

তবে কেমন হতো? যেখানে বঙ্গবন্ধু বিরাজ করছেন সেখানে বাংলাদেশ অংশ নিলে? বাস্তবে এমন হলে, সারাবিশ্বে নিদর্শন হয়ে উঠবে দুপারের বাঙালি। মত পশ্চিমবঙ্গের বিদ্বজনদের। পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ড’এর সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আমরা সত্যিকারে দুই বাংলা মিলিয়ে লিটিল ম্যাগাজিন এবং সাহিত্যোৎসব করতে পারি, তাহলে সারা পৃথিবীতে আমরা একটা নিদর্শনমূলক জায়গায় পৌঁছাতে পারবো। সারা পৃথিবীতে এক ভাষাতে এত লিটিল ম্যাগাজিন কোথাও প্রকাশিত হয় না। একমাত্র বাংলা ভাষাতেই হয় আর সেখানে যদি দুই বাংলা যুক্ত হলে বহু লিটিল ম্যাগাজিন এবং বহু সাহিত্যিক যারা লিটিল ম্যাগাজিন থেকে উঠে এসেছেন তাদের একটা জায়গা হবে।

কবি সুবোধ সরকারের অভিমত, সত্যি যদি বাংলা একাডেমি এবং পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমি মিলিয়ে দু’দেশেই দুটো বড় করে লিটল ম্যাগাজিন এবং সাহিত্য উৎসব করা যায় সেটা হবে আনন্দের। এবং তা হত গর্বের। এ ধরনের উদ্যোগে দু’পারের বাঙালিরাই উপকৃত হবে বলে আমি মনে করি।

লেখক প্রচেত গুপ্ত বলেন, আমরা যারা লেখক এবং বাংলা ভাষায় লেখালেখি করে থাকি তারা-আমরা সব সময় একসঙ্গে আছি। আমাদের লেখকদের মধ্যে কোনো বেড়াজাল নেই। বাংলাদেশের একজন লেখকের বই আমি যেমন পাঠক হয়ে পড়ি। আমার বইও বাংলাদেশে একজন লেখক একইভাবে দেখেন।

এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, আমরা আশাবাদী। আমরা এরকমটা করতে চাই। আমরা দুই বাংলা একসঙ্গে অনেক কাজ করে থাকি। আমরা আশাবাদী, সাহিত্য উৎসব ও লিটল ম্যাগাজিন মেলাও দুই বাংলা একসঙ্গে কাজ করবে। আসলেই আমরা দুই বাংলা মনের দিক থেকে এক।

তবে শুধু সাহিত্য উৎসব এবং লিটল ম্যাগাজিন মেলা নয়, পশ্চিমবঙ্গ তথ্য সংস্কৃতি ও বাংলা আকাদেমির আয়োজনে উৎসবকে কেন্দ্র করে গগনেন্দ্র প্রদর্শনশালায় সেজে উঠেছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের, দ্বিশত জন্মবর্ষ স্মরণে ‘তিষ্ঠ ক্ষণকাল’ শিরোনামে এক প্রদর্শনী। যেখানে বাংলা ভাষায় এই সনেট স্রষ্টাকে নতুনভাবে চিনছে প্রজন্মরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ১৫ জানুয়ারি, ২০২২
ভিএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।