কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে এবার সরাসরি রাজপথে নামলেন এককালের পরিবর্তনপন্থীরা৷ পার্ক স্ট্রিট, কাটোয়ায় গণধর্ষণ থেকে সংবাদপত্রের কালো তালিকা, নোনাডাঙায় বস্তি উচ্ছেদ, এপিডিআরের মিছিলে হামলা সহ একাধিক ঘটনার প্রতিবাদে একজোট হয়েছেন সুনন্দ সান্যাল, কবীর সুমন, কৌশিক সেনরা৷
বৃহস্পতিবার হাজরা মোড়ে এপিডিআরের মিছিলে হামলার দিন টেলিভিশন চ্যানেলের বুম কিংবা সংবাদপত্রের কলামের বাইরে বেরিয়ে তাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ আছড়ে পড়ল রাজপথে৷
ফের মহানগরীর রাস্তায় দেখলো বিদ্বজ্জনদের৷ ছিলেন নকশাল নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায়ও। কয়েক বছর আগেও একই ছবিই চোখে পড়েছিল রাজপথে৷ সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের ঘটনার প্রতিবাদে তত্কালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে মহানগরীর রাস্তায় আছড়ে পড়েছিল বিক্ষোভের ঢেউ৷ সরব হয়েছিলেন বিদ্বজ্জনেরা৷
পরবর্তীকালে পরিবর্তনের ডাকে সুর মিলিয়েছিলেন রাজ্যের অধিকাংশ বিদ্বজ্জন৷ পরিবর্তনের ব্যানারে দেখা গিয়েছিল বহু পরিচিত মুখ৷ এদিন তার মধ্যেই বহু মুখ চোখে পড়ল রবীন্দ্র সদন চত্বরে।
কৌশিক, সুমন থেকে সুনন্দ- প্রত্যেকের গলাতেই শোনা গেল পরিবর্তনের সরকারের অভিমুখ নিয়ে শঙ্কা৷ সাম্প্রতিককালে একের পর এক ঘটনায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে উঠল প্রশ্ন৷
প্রত্যেকেরই ভয়ার্ত জিজ্ঞাসা, কোন পথে এগোচ্ছে এই সরকার?
কিন্তু দশমাসে এমন কী হল? যাতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শনের প্রয়োজন পড়ল? প্রশ্নের উত্তরে, বিদ্বজ্জনদের বক্তব্য, সময়ের ডাকে এবং স্বাধীন সত্তার টানেই আজ আবার পথে তাঁরা৷ বিদ্বজ্জনদের এই বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ কবীর সুমনও (সুমন মুখোপাধ্যায়)৷ আগের মতোই এদিন তারও গলায় ছিল রাজ্য সরকারের সমালোচনা ৷
সুমন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ক্রমাগত অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। এত তাড়াতাড়ি ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে যে, তা খুবই আশঙ্কার কথা। মিছিলের ওপর হামলার ঘটনা দুঃখজনক, ধিক্কারের বিষয়। পর পর ঘটনায় আমি আশঙ্কিত। ’
কৌশিক সেন বলেন, রাজনৈতিক রঙের বাইরে মানুষের পরিচয় হারিয়ে যেতে বসেছে। নতুন সরকারের সিপিআইএমের পদাঙ্ক অনুসরণ করা উচিত্ নয়। তাহলে পরিবর্তন কীসের? এই ঘটনায় তৃণমূলকর্মীরা থাকলে তো ভয়ঙ্কর প্রবণতা।
শুধু নোনাডাঙা কাণ্ডই নয়। সামগ্রিকভাবে একটা অসহিষ্ণুতার পরিবেশ দেখা দিয়েছে বলেই মত বুদ্ধিজীবীদের একাংশের। সভায় আসতে পারেননি মহাশ্বেতা দেবী। কিন্তু গোটা ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এসএমএস পাঠিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৩২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১২
আরডি/
সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর