ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মমতাকে পাহাড়ে বয়কটের ডাক জনমুক্তি মোর্চার

শিলিগুড়ি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১২
মমতাকে পাহাড়ে বয়কটের ডাক জনমুক্তি মোর্চার

শিলিগুড়ি: রাজ্য সরকারের সঙ্গে ফের সংঘাতের পথ বেছে নিতে চলেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে দার্জিলিং পাহাড়ে বয়কটের ডাক দিলো তারা।



ডুয়ার্সের নাগরাকাটায় রোববার মোর্চা নেতৃত্বাধীন ‘যৌথ মঞ্চ’-এর সভার প্রশাসনিক অনুমতি না মেলায় সরকারের বিরোধীতায় নেমেছে মোর্চারা। সেই কারণে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব সহ মন্ত্রীসভার সদস্যদের দার্জিলিং পাহাড়ে ঢুকতে না দেওয়ার হুমকি দিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং।

প্রয়োজনে ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’(জিটিএ) প্রত্যাখান করবেন বলেও জানালেন।

শনিবারই ডুয়ার্সের বানারহাট থানার চামুর্চি বনবস্তিতে কমিউনিটি হলে এক সভায় গুরুং বলেন, ডুয়ার্সের মানুষকে বোঝাতে চাই, জিটিএ-চুক্তিতে তারা কী সুবিধা পাবেন। সেই সভা আমাদের করতে দেওয়া হল না! অতীতে বাম-সরকারও আমাদের সঙ্গে এমন করেছে।

তিনি বলেন, ‘পরিবর্তনের’ পরেও একই ধরনের ঘটনার প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী-সহ মন্ত্রিসভার সদস্যদের পাহাড়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এমন হলে জিটিএ প্রত্যাখ্যান করা হবে। নতুন করে আন্দোলন করব। এমন আন্দোলন হবে যে তা সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

আদিবাসী বিকাশ পরিষদ নেতৃত্বাধীন জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির ডাকা হরতালের বিরোধীতায় সভা করতে চেয়েছিল মোর্চা নেতৃত্ব। অশান্তির আশঙ্কায় প্রশাসন শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত নাগরাকাটায় ১৪৪ ধারা জারি করে।

আর এ নিয়েই সরকারের সঙ্গে সংঘাত বাধতে চলেছে মোর্চা নেতৃত্বের। তাদের যুক্তি, জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির প্রতি নরম মনোভাব দেখাচ্ছে সরকার। তাদের ডাকা সাম্প্রতিক বনধ ব্যর্থ করতে রাস্তায় নামেনি পুলিশ-প্রশাসন। এমনকি জোট শরিক কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি আবার রাস্তায় নেমে সেই বনধ সমর্থন করেছিল।

সরকার মোর্চার সভা করতে পারমিশন না দেওয়ায় এদিন দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, পাহাড়ে তৃণমূলের কোনো দল নেই। সংগঠনও নেই। তা হলে ওরা পাহাড়ে গিয়ে কী করবেন?

যদিও এর জবাব দিতে গিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, উন্নয়নের কাজেই আমরা পাহাড়ে যাই। পাহাড়ে রাজনীতি করতে যাই না।

বাম-আমলে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং সে সময়ের পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যকে পাহাড়ে ঢুকতে না দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল মোর্চা।

মোর্চার একই রকম ‘হুমকি’র প্রতিক্রিয়াতে অশোক ভট্টাচার্য বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বা একজন মন্ত্রীর রাজ্যের সর্বত্র যাওয়ার অধিকার রয়েছে। এ ধরনের হুমকি বা ফতোয়া অগণতান্ত্রিক।

তিনি বলেন, মোর্চাকে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তৃণমূল। সেগুলো কার্যকর না হওয়ায়, মোর্চা এখন এ ধরনের হুমকি দিচ্ছে।

এদিকে,আদিবাসী বিকাশ পরিষদসহ ২৬টি সংগঠনের ডাকা ১২ ঘণ্টার হরতালে এর ব্যাপক সাড়া পড়েছে ডুয়ার্সে। সকাল থেকেই রাস্তাঘাট শুনশান। যানবাহন প্রায় নেই বললেই চলে। দোকানপাট বন্ধ। কোনও রকম অশান্তি এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘন্টা, এপ্রিল ২২, ২০১২

আরডি / সম্পাদনা : আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।