ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ত্রিপুরায় তিন দিনের বিশেষ রবীন্দ্র জয়ন্তী অনুষ্ঠান শুরু

আগরতলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১২

আগরতলা (ত্রিপুরা) :  দেশ ভাগ হয়েছে। ভাগ হয়েছে সীমানা।

রাজনৈতিক মতপার্থক্যও হয়েছে কখনো, কখনো। কিন্তু ভাগ হননি একটি মানুষ। যার নাম রবীন্দ্রনাথ। তাকে ভাগ করা যায়নি। তিনি দু’দেশের সীমানা অতিক্রম করে দু প্রান্তেই সমানভাবে ভাস্বর।

মঙ্গলবার এ কথাটি আরও একবার প্রমাণিত হল। প্রমাণিত হল ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে। যেখানে দুই দেশের শিল্পীরা গাইলেন রবীন্দ্র সুরে। নাচলেন রবীন্দ্র তালে। আর দর্শক হৃদয় মথিত হল রাবীন্দ্রিকতার স্পর্শে। আর সবাই ভুলে রইলেন সীমান্তের ভেদাভেদকে।

এ ধরনের অনুষ্ঠান এর আগে রাজ্যে আয়োজিত হয়নি। তিন দিনব্যাপী এ আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ত্রিপুরার শিল্পীরা মিলে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠান পালন করছেন। ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকার বেঙ্গল ফাউন্ডেশন এবং রাজ্যের চিত্রশিল্পীদের সংস্থা কিরাতের যৌথ প্রচেষ্টায় তিন দিনের এ বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজিত হচ্ছে।

১৫২তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর এ বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে রাজ্যে এসেছেন বাংলাদেশের ৩০ জন শিল্পীর একটি দল।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় এর উদ্বোধন হয়ে গেল ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে এ অনুষ্ঠান। চিত্র প্রদর্শনী, রবীন্দ্র সঙ্গীত, রবীন্দ্র নৃত্য আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এতে। অনুষ্ঠান চলছে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামসহ আরও দুটি জায়গায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিটি সেন্টারে বাংলাদেশের চিত্রশিল্পীদের শিল্প নিয়ে একটি প্রদর্শনীও চলছে। বাংলাদেশের চিত্রশিল্পীদের আঁকা ৩০টি ছবি এতে স্থান পেয়েছে।

মঙ্গলবার সকালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের কর্ণধার সুবীর চৌধুরী, বাংলাদেশের বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, কিরাতের সভাপতি বিধায়ক পবিত্র কর এবং ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক অরুণোদয় সাহা।

প্রত্যেক বক্তার ভাষাতেই উঠে এসেছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কথা। সুবীর চৌধুরী ও কাইয়ুম চৌধুরী বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা আমাদের রবীন্দ্রনাথ। আর ত্রিপুরা সেই মুক্তিযুদ্ধের আশ্রয়স্থল। আমাদের রাজনৈতিক বিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু সংস্কৃতির জগতে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। ’

দুই দেশের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ আরও বাড়ানোর কথা বলেন তারা।
বিধায়ক পবিত্র কর বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ আর নজরুল ভাগ হননি। ভাগ করা যাবেও না। এই দুই অমর স্রষ্টাকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই আমরা। ’

উপাচার্য তার ভাষণে আবারও জানালেন ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ স্টাডি সেন্টার গড়ার কথা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী এবং বাংলাদেশের শিল্পীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।

বাংলাদেশ সময় : ১৬৪০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১২
তন্ময় চক্রবর্তী / সম্পাদনা : অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

                                ফেরদৌস মাহমুদ, শিল্প-সাহিত্য সম্পাদক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।