গৌহাটি: বন্যা কবলিত ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য আসামের জন্য ৫০০ কোটি রুপি আর্থিক সাহায্য প্রাথমিক ভাবে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ৷
সোমবার হেলিকপ্টারে আসমের বন্যা দুর্গত এলাকা প্রদর্শন করেন তিনি ৷এই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধি ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ ।
ইতিমধ্যেই এই বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৭ জন।
এই মুহূর্তে রাজ্যের ২৭টি জেলাই বন্যা বা ধসের কবলে। সরকারি হিসাবে মোট ক্ষতিগ্রস্ত ১৯ লাখ ৩৭হাজার ৬৫৫ জন। তিনদিন বৃষ্টি না হওয়ায় পানি দ্রুত কমছে।
তবে এখনও নেমাতিঘাট, তেজপুর, গুয়াহাটি, গোয়ালপাড়া ও ধুবুরিতে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র। করিমগঞ্জে কুশিয়ারা, ধর্মতুলে কপিলিও বিপদসীমার উপর দিয়ে বহমান। ধুবুরি ও করিমগঞ্জেও বাঁধভাঙার আশঙ্কায় প্রশাসন।
রাজ্য জুড়ে ২হাজার ৬৬৭টি রাস্তা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধ ভেঙেছে ১হাজার ৭৪১টি স্থানে। মোট ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচা, পাকা সেতু ও কালভার্টের সংখ্যা ৪৪০। লামডিং, শিলচর ও ত্রিপুরার মধ্যে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্নই রয়েছে। এনডিআরএফ-এর ১৬টি দল, সেনাবাহিনীর ৭টি ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২০টি দল উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।
বন্যায় ভাল রকম ক্ষতিগ্রস্ত ডিব্রু-শইখোয়া জাতীয় উদ্যান। ব্যাপক স্রোতের বাধায় এনডিআরএফ ২৭ জুনের আগে অরণ্য ও অরণ্যসংলগ্ন গ্রামগুলিতে ঢুকতেই পারেনি। ১৪টি হাতি রৌমারিয়ার লোকালয়ে চলে আসে। ভেসে যাওয়া বেশ কিছু হরিণের সংবাদ পেলেও মৃত প্রাণীদের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।
চোরাশিকার আটকাতে জেলা প্রশাসন ডিব্রু-শইখোয়ায় দুটি ভাসমান শিবির বসায়। উদ্ধার হওয়া পশুদের চিকিৎসার জন্য কাজিরাঙা থেকে আনা হয় পশু চিকিৎসক। কাজিরাঙার পুরো উদ্যানই জলের তলায় চলে গিয়েছিল। সেখানে শতাধিক প্রাণী মারা গিয়েছে। শতাধিক উদ্ধার হওয়া প্রাণীকে পানবাড়ি ও কুকুরাটা সংরক্ষিত অরণ্যে ছাড়া হয়।
পবিতরার ৮০ শতাংশ এলাকা জলমগ্ন। লাউখোয়া অভয়ারণ্যে ৮টি শিবির বন্যায় ডুবে রয়েছে। বুড়াচাপোড়ির সব শিবির জলমগ্ন। মানস জাতীয় উদ্যানে বাঁশবাড়ি ও মাথানগুড়ির মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ভুইয়াঁপাড়া রেঞ্জও পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর