কলকাতা: ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে কবি নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার ৯০ বছর উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশ সংস্কৃতি বিনিময় কর্মসূচির অনুষ্ঠান চলছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কলকাতার ভবানীপুরে জাতীয় সাহিত্য আকাদেমীতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় বিদ্রোহী কবিতা নিয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, অধ্যাপক মানবেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়, অধ্যাপক মীরাতুন নাহার, নজরুল গবেষক মুহম্মদ নুরুল হুদা, বাঁধন সেনগুপ্ত, কবি পরিবারের সদস্য কল্যাণী কাজী প্রমুখ।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘‘ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশই এতো বড় করে এবার এ অনুষ্ঠান পালন করছে। ১৯৯৯ সালে একবার এ ধরনের অনুষ্ঠান ছোট করে হয়েছিল। এই ২টি বছর আমাদের ভালো গেল, রবীন্দ্রনাথ দিয়ে শুরু আর নজরুল দিয়ে শেষ হচ্ছে। ’’
তিনি বলেন, কবির বিদ্রোহী কবিতা দিয়েই তাকে মূল্যায়ন করা যায়, আর কিছুই লাগে না।
অধ্যাপক মানবেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় বলেন, সাহিত্যিকদের জন্ম শতবর্ষ হয়। কিন্তু কবিতার ৯০ বছরের অনুষ্ঠান! নজরুল এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তিনি জীবতকালে ব্যতিক্রম ছিলেন, মৃত্যুর পরেও ব্যতিক্রম। তিনিই পারেন দুই দেশকে হ্যান্ডশেক করাতে।
মুখ্য আলোচক মীরাতুন নাহার বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি দিয়ে নজরুলকে বিচার করা যায় না। তাই স্রষ্টাকে ছাড়িয়ে সৃষ্টিকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে আজ। এতো বিস্ময়কর।
নজরুলের কবি কন্ঠ নির্ভীক দেশপ্রেমিক। তিনি চেয়েছিলেন দেশ হবে দেশবাসীর। এই সত্য বলার ক্ষমতা তখন কোনো সাহিত্যিকের ছিল না। দেশবাসী তাকে তখন চেনেননি। বৃটিশ শাসকরা চিনেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতি তিনি কখনো করেননি। তিনি ছিলেন রাজনীতির দিশারী। কিন্তু দুর্ভাগ্য নজরুলকে আমরা স্মরণ করি, অনুসরণ করি না। ’’
নজরুল গবেষক নুরুল হুদা বলেন, প্রথাগত শিক্ষা নয়, সমগ্র বিশ্বই ছিল নজরুলের পাঠশালা। তার বিদ্রোহী কবিতার উন্মেষ লেটোর গান থেকেই। লেটোর গান লিখতে গিয়েই স্বভাব কবি হয়েছেন। তিনি করাচীতে গিয়ে যুদ্ধ করেননি। ওই সময় তিনি রবীন্দ্রনাথ আত্মস্থ করেছেন। তিনি ছিলেন একজন স্বশিক্ষিত মানুষ। তাই তার কবিতা বিদ্রোহী সত্যিকারের অর্থে বিদ্রোহ ঘোষণা করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১২
আরডি/ সম্পাদনা: অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর