শিলিগুড়ি: জটিলতা নয় অশান্তি নয়, দার্জিলিংয়ে চাই গণতন্ত্র, শান্তি ও উন্নয়ন। এই বার্তাকে সামনে রেখে দার্জিলিং পাহাড়ের জিটিএ নির্বাচনে শুক্রবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সিপিএম প্রার্থীরা।
একই দিনে দার্জিলিং শহরে দলটির এক সাধারণ সভায় মোট ১৫জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ৮জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র পেশ করেন।
বাকিরা শনিবার মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। এই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে পাহাড়ের পার্টিকর্মীদের মধ্যে প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যায়।
এদিকে, জিটিএ নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং। তিনি তাকভর কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী হচ্ছেন পদম বাহাদুর সুব্বা। শুক্রবার মোর্চার পক্ষ থেকে বিমল গুরুংয়ের নাম ঘোষণা করা হয়।
এ ছাড়াও মোর্চার সহ সভাপতি প্রদীপ প্রধান লেবং কেন্দ্র এবং সচিব রোশন গিরি কার্শিয়াঙের একটি কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন।
অন্যদিকে তৃণমূল ১৭টি মনোনয়ন পত্র তুলেছে বলে জানা গেছে। তবে জিটিএ নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত তৃণমূল প্রার্থী দেবে কী না, তা নিশ্চিত নয়। এ নিয়ে দলের মধ্যে মতবিরোধও আছে।
এদিন সিপিএম`র প্রার্থী ঘোষণার সভায় দার্জিলিং পাহাড়ের নানা প্রান্ত থেকে দলীয় কর্মীরা হাজির ছিলেন।
উপস্থিত ছিলেন পার্টির জেলা কার্যকরী সম্পাদক জীবেশ সরকার, পার্টি নেতা অশোক ভট্টাচার্য, কে বি ওয়াতার, পি রায়, সমন পাঠক প্রমুখ।
সভায় দলের কর্মীরা বলেন, জিটিএ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও এখনও গণতান্ত্রিক পরিবেশের অভাব রয়েছে। সন্ত্রাসের অভিযোগ আছে। স্বাভাবিকভাবেই দাবি ওঠে প্রার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে।
এদিন মনোনয়নপত্র জমা দেবার পাশাপাশি জীবেশ সরকার, পি রায় ও সমন পাঠক গণতান্ত্রিক পরিবেশ কায়েম করা ও প্রার্থীদের উপযুক্ত নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানিয়ে জেলার পুলিশ সুপার কুনাল আগরওয়ালের সঙ্গে দেখা করেন।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, প্রার্থীদের উপযুক্ত নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি তারা তুলে ধরেন। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন বলে পুলিশ সুপার সিপিএম নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেছেন।
এদিন সাবেকমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস বাদে পাহাড়ের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা চলবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দার্জিলিংয়ে গোর্খা লিগের সভানেত্রী ভারতী তামাঙের সঙ্গে আলোচনা করেন জীবেশ সরকার ও অশোক ভট্টাচার্য। গত ২ জুলাই পাহাড়ের সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে জিটিএ নির্বাচনে লড়াই করার আহ্বান জানিয়ে সি পি আর এম, জি এন এল এফ, অল ইন্ডিয়া গোর্খা লিগ এবং দার্জিলিং সিভিল সোসাইটির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার সিপিএম প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র পেশ করেন রিম্বিক লোধামা কেন্দ্রে গৌতম রাজ রাই। রেলিং কাইজোলিয়া কেন্দ্রে কৃষ্ণবাহাদুর সুব্বা, পুলবাজার বিজনবাড়ি সমষ্টিতে রমেশ শর্মা, তাকভর কেন্দ্রে পদম বাহাদুর সুব্বা, দার্জিলিং ১ সমষ্টিতে অনুপ কে সি, দার্জিলিং ৪ সমষ্টিতে রমেশ ছেত্রী, চুঙটুঙ মারেবুঙে সুখ বাহাদুর তামাং ও তাগদা তিস্তা ভ্যালি কেন্দ্রে ইয়াদম ঠাকুরি।
এছাড়া অন্যান্য ঘোষিত প্রার্থীরা হলেন রঞ্জনা তামাঙ, নামগেল শেরপা, বিরাজ সুব্বা, বিনোদ মোটে (সংরক্ষিত), মহেন্দ্র রাই, সঞ্জয় ডুরাল ও ডম্বর প্রসাদ।
কার্শিয়াঙ ও কালিম্পঙ মহকুমাতেও প্রার্থী দেওয়া হবে বলে সিপিএমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: বেনু সূত্রধর, নিউজরুম এডিটর; নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর