কলকাতা: ‘‘ভারতের আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অ্যাথলেট পিঙ্কি প্রামানিক উভয় লিঙ্গ। তবে তার শরীরে পুরুষের হরমোনের মাত্রারিক্ত উপস্থিতি রয়েছে।
এ কথা জানিয়েছেন ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের চিকিৎসক নিশীথ রঞ্জন চৌধুরী।
নিশীথ রঞ্জন চৌধুরী জানান, ‘‘পিঙ্কির শারীরিক অবস্থাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, সিউডোহার্মাফ্রোডাইট৷ তার ক্রোমোজোম এক্স ওয়াই৷ তবে ধর্ষণের ক্ষমতা তার নেই৷’’ আদালতে জমা পড়া মেডিক্যাল রিপোর্টে এ কথাই উল্লেখ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
রির্পোট প্রসঙ্গে পুলিশ ও অন্যান্য সুত্রে জানা গেছে, পিঙ্কি সিউডো হার্মাফ্রোডাইট বা উভয়লিঙ্গ৷ তার শরীরে এক্স ওয়াই ক্রোমোজোম রয়েছে, যা পুরুষের ক্রোমোজোম৷ তবে তার যৌনাঙ্গ অসম্পূর্ণ৷ এজন্য তার ধর্ষণের ক্ষমতা নেই৷
শরীরে পুরুষ ক্রোমোজোমের উপস্থিতি রয়েছে বলে কি পিঙ্কিকে পুরুষ বলা যায়? এ প্রশ্নের উত্তরে চিকিৎসক নিশীথ রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, সিউডোহার্মাফ্রোডাইটের শরীরে এক্স ওয়াই ক্রোমোজোম থাকলে, সেক্ষেত্রে তাকে মেল সিউডোহার্মাফ্রোডাইট হিসাবে গণ্য করা হবে৷ সেক্ষেত্রে কেউ ধর্ষণ করতে পারে না৷
এর পাশাপাশি তার দেশ-বিদেশে জেতা পদকগুলো কি নিয়ে নেওয়া হবে তাও প্রশ্ন উঠেছে।
নিশীথ রঞ্জন চৌধুরীর দাবি, যে সময় পিঙ্কি পদকগুলো জিতেছেন, সে সময় তার শরীরে পুরুষ হরমোনের মাত্রা এখন জানা সম্ভব নয়৷ ফলে সেই পদকগুলো কেড়ে নেওয়ার সম্ভাবনা কম৷ তবে তার শরীরে পুরুষের হরমোনের মাত্রারিক্ত উপস্থিতির কারণে পিঙ্কি আর নারীদের কোনো প্রতিযোগিতায় নামতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, নারী অ্যাথলিট হিসেবে দেশে-বিদেশে পদক জেতা পিঙ্কি প্রামানিক তার সঙ্গে একই ফ্ল্যাটে বসবাস করা অপর এক নারী অনামিকা আচার্যকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেন অনামিকা নিজেই। নারীর ছদ্মবেশে পিঙ্কি আসলে পুরুষ এ অভিযোগও তোলা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পিঙ্কিকে গ্রেফতার করা হয়।
২৫ দিন দমদম সংশোধনাগারে (কারাগার) থাতার পর মঙ্গলবার বারাসত আদালত তাকে জামিন দেন। ওই দিন রাত হয়ে যাওয়ায় সংশোধনাগার (কারাগার) কর্তৃপক্ষ তাকে ছাড়তে পারেনি। ফলে বুধবার সকালে সংশোধনাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে নিজ ফ্ল্যাটে ফিরে যান পিঙ্কি।
মঙ্গলবার আদালতের বিচারকও তার আদেশে বলেন, ‘‘শারীরিক পরীক্ষায় তার দেহে পুরুষাঙ্গ বা স্ত্রী অঙ্গের অস্তিত্ত্ব পাওয়া যায়নি। তার দেহে জিনগত ও হরমোনগত বৈষম্য ধরা পড়েছে। তিনি শারীরিক সম্পর্ক গড়তে সক্ষম কিনা, তারও প্রমাণ মেলেনি। কাজেই তার বিরুদ্ধে ৩৭৬ ধারা প্রযোজ্য কিনা সে প্রশ্ন থেকেই যায়। ’’ শেষে বিচারক তাকে জামিনে মুক্তি দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: বেনু সূত্রধর, নিউজরুম এডিটর ও অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর