গুয়াহাটি: প্রকাশ্য সড়কে তরুণীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় দোষীদের ধরতে পুলিশকে দু’দিনের সময়সীমা বেঁধে দিলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
পুলিশ সূত্র জানায়, গুয়াহাটির প্রকাশ্য রাস্তায় এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় ২০ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৩ জন দুষ্কৃতিকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। কিন্তু ঘটনার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও, মাত্র ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন।
তবে এ ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তা ও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মানবাধিকার সংগঠন। প্রশ্ন উঠেছে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অম্বিকা সোনিকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, শ্লীলতাহানির সংক্রান্ত খবর পরিবেশনে সংবাদমাধ্যমকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে জিএস রোডের একটি পানশালা থেকে এক তরুণী তার বন্ধুকে নিয়ে বের হবার সময় মুখোমুখি হয় একদল দুষ্কৃতির। প্রথমে তাকে উত্যক্ত করা হয় এবং পরে শুরু হয় নির্যাতনের পালা।
মেয়েটি সাহায্য চেয়েছিলেন, কিন্তু পাননি। বরং ঘটনাস্থলে উপস্থিত গুয়াহাটিবাসীর একাংশ তার লাঞ্ছনা মোবাইল-বন্দী করতেই বেশি ব্যস্ত ছিলেন।
ঘটনাচক্রে ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় বিষয়টি নজরে আসে সাংবাদিক মুকুল কলিতার। শেষে তার হস্তক্ষেপে পুলিশ এসে একাদশ শ্রেণীর ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। অভিযুক্ত ১৬ জনের মধ্যে মাত্র ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মূল অভিযুক্ত অমরজ্যোতি কলিতা এখনও পলাতক।
কিন্তু ইতিমধ্যেই এমএমএস হয়ে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে ১৩ জনকে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হলেও কেন বাকিরা ধরা পড়ছে না? কেনই বা পুলিশ থানার মাত্র সোয়া কিলোমিটার দূরে ঘণ্টাখানেক ধরে এক তরুণীর ওপর অবর্ণনীয় অত্যাচার চালাতে পারল দুষ্কৃতিরা?
আসাম পুলিশের ডিজি জয়ন্তনারায়ণ চৌধুরীর জবাব, ‘‘পুলিস এটিএম মেশিন নয় যে, অপরাধ ঘটলেই কেউ সেই মেশিনে কার্ড ঢোকাবেন, আর পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে হাজির হবে। ’’
উত্তর-পূর্ব ভারতের বৃহত্তম শহরে মহিলাদের নিরাপত্তার প্রশ্নের পাশাপাশি রাজ্যের পুলিশ প্রধানের এ বিতর্কিত উন্নাসিক মন্তব্যের প্রতিবাদেও সোচ্চার হয়েছে অসম গণ পরিষদ, অসম ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট, বিজেপিসহ সমস্ত বিরোধী দল।
বাংলাদেশ সময়: ০৪০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১২
আরডি/ সম্পাদনা: অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর