ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন প্রণব মুখার্জি

নয়াদিল্লি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১২
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন প্রণব মুখার্জি

নয়াদিল্লি: ইতিমধ্যেই তিনি জেনে গেছেন, তিনি হতে চলেছেন প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি। তাই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন প্রণব মুখার্জি।



প্রণব মুখার্জি নিজেই বলেছেন, “রাষ্ট্রপতি ভবনের বিষয়আশয় আমার সম্পূর্ণ অজানা। ”

কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি থেকে মন্ত্রিসভার বৈঠক দীর্ঘদিন ধরে যে মানুষটি সতীর্থদের হরেকরকম জটিল জিনিস বুঝিয়েছেন, হয়েছিলেন ড্যামেজ কনট্রোল ম্যানেজার। এবার ৭৭ বছর বয়সে তিনি নিজেই এখন ছাত্র!

রাষ্ট্রপতি ভবনের ‘মিনিট-টু-মিনিট’ প্রোটোকল বোঝাতে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্মকর্তারা নিয়মিত এসেছেন তার কাছে। আর তিনি নিজে অবসর পেলেই বাড়িতে বসে মগ্ন হয়ে পড়ছেন আমন নাথের লেখা ‘ডোম ওভার ইন্ডিয়া-রাষ্ট্রপতি ভবন। ’

১৭৭৩ সালে ওয়ারেন হেস্টিংসের তৈরি ‘প্রেসিডেন্টস বডিগার্ড’ও প্রস্তুত। এই বাহিনী গঠনের জন্য সে সময় বারাণসীর রাজা চৈত সিংহের কাছ থেকে ৫০টি ঘোড়া আর ৫০ জন সেনা আনানো হয়েছিল। আজ সেই দেহরক্ষীর সংখ্যা ২৩৪। নতুন রাষ্ট্রপতিকে বরণ করতে তারাও প্রস্তুত।

২৫ জুলাই শপথের দিন রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে এক প্রতিনিধি প্রথমে যাবেন ১৩ নম্বর তালকাটোরা রোডে, প্রণববাবুর বাসভবনে। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে রাষ্ট্রপতি ভবনে। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে প্রতিভা পাতিল প্রণব মুখার্জিকে সঙ্গে নিয়ে যাত্রা শুরু করবেন সংসদ ভবনের দিকে।

রাষ্ট্রপতির ফিটনের ডান দিকে বসবেন তিনি। প্রতিভা পাতিল বাঁ দিকে। যাওয়ার পথে হাজার ঘোড়সওয়ার সেনা প্রতিভাকে হাজার সেলাম জানাবেন। সংসদ ভবনে তখন অপেক্ষায় থাকবেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, লোকসভার স্পিকার মীরা কুমার এবং উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি।

সেখানেও গাড়ি থেকে নামতে না নামতেই দেহরক্ষীরা প্রতিভাকে ফের সেলাম জানাবেন। বিদায়ী এবং ভাবী রাষ্ট্রপতি যাবেন সংসদের সেন্ট্রাল হলে। এই সেন্ট্রাল হলের অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজকুমার সিংহ।

তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে অনুমতি চাইবেন শপথগ্রহণের জন্য। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এইচ কপাডিয়া প্রণববাবুকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন।

শপথগ্রহণের সময় মঞ্চে কে কোথায় বসবেন, সেটি পূর্বনির্ধারিত। মঞ্চের একদম বাঁ দিকে লোকসভার স্পিকার, তারপর রাজ্যসভার চেয়ারম্যান, বিদায়ী রাষ্ট্রপতি, ভাবী রাষ্ট্রপতি এবং ডান দিকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। দর্শক আসনে থাকবেন মনমোহন সিং, সোনিয়া গান্ধী, সুষমা স্বরাজরা। শপথের পর প্রতিভা পাতিল এবং প্রণব মুখার্জি নিজেদের মধ্যে আসন বদল করবেন।

এই সন্ধিক্ষণেই হবে পালাবদল। সঙ্গে সঙ্গে ২১টি তোপধ্বনি। রাষ্ট্রপতির সচিব ক্রিস্টি ফার্নান্ডেজ শপথের খাতায় স্বাক্ষর করাবেন নতুন রাষ্ট্রপতিকে। স্বরাষ্ট্রসচিব আবার ঘোষণা করবেন নতুন রাষ্ট্রপতির স্থলাভিষিক্ত হওয়ার বিজ্ঞপ্তি।

এরপর প্রণব মুখার্জি ইংরেজিতে বক্তৃতা দেবেন। সেই বক্তৃতার হিন্দি অনুবাদ পড়ে শোনাবেন উপরাষ্ট্রপতি। সভা শেষ করার ঘোষণা করবেন স্বরাষ্ট্রসচিব। তার পরে জাতীয় সঙ্গীত।

আবার মিছিল করে রাষ্ট্রপতি ভবনে ফেরা। এখন দেহরক্ষীরা নতুন রাষ্ট্রপতিকে আগের মতো সেলাম জানাবেন। রাষ্ট্রপতি ভবনে এসে প্রতিভা পাতিল প্রণব মুখার্জিকে তার স্টাডি রুমে নিয়ে যাবেন।

সেখানকার অনুষ্ঠান শেষে ফিটনে চেপে বাইরে আসবেন। সেখানে দু’জনে বসবেন একটি জিপে। দেওয়া হবে গার্ড অফ অনার। এই অনুষ্ঠানের জন্য একটি সামিয়ানা খাটানো হচ্ছে। এখান থেকেই নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রণব মুখার্জি যাবেন বিদায়ী রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিলকে বিদায় জানাতে।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।