নয়াদিল্লি: ভারতের নয়া রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির গলায় ইন্দিরা গান্ধীর ‘গরিবি হটাও’ স্লোগান শোনা গেল বুধবার৷
ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়ে এদিন তিনি বলেন, “দেশের অভিধান থেকে মুছে দিতে হবে দারিদ্রকে৷ শিক্ষাই স্বর্ণযুগের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। যে সম্মান আপনারা দিয়েছেন, তার জন্য আমি অভিভূত।
তিনি আরও বলেন, “খিদের থেকে বড় অপমান-লাঞ্ছনা আর নেই। ওপরের স্তর থেকে চুঁইয়ে পড়া উন্নয়ন দরিদ্রের যথার্থ আশা-আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করতে পারেনি। যাঁরা নিচে পড়ে আছেন, তাঁদের ওপরে তুলে আনতে হবে। আধুনিক ভারতের অভিধান থেকে মুছে ফেলতে হবে দারিদ্রকে৷ শান্তি-সম্প্রীতি ও গণতন্ত্রই আধুনিক ভারতের ভিত৷ তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অর্থনৈতিক সাম্য৷ সেটাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে সমৃদ্ধির লক্ষ্যে৷”
তিনি এও বলেন, “একমাত্র শিক্ষাই স্বর্ণযুগের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে এদেশকে৷ সামাজিক রীতিনীতির ভিত গড়ে ওঠে দেশীয় কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও শিক্ষার ঐতিহ্যের উপর৷ তাই সবাই যাতে শিক্ষার অধিকার পান, তা সুনিশ্চিত করতে হবে৷ ভারতীয় দর্শন পাঠ্যবইয়ের বিষয় নয়। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে প্রতিদিন সেটা সমৃদ্ধ হচ্ছে। যে মূল্যবোধ মানুষকে সর্বোচ্চ মূল্য দেয়। ”
এদিন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধেও বার্তা দিয়ে নয়া রাষ্ট্রপতি বলেন, “আমরা চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে রয়েছি। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছিল ঠাণ্ডা যুদ্ধ। কিন্তু সেই যুদ্ধের তীব্র আঁচ পেয়েছে এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা। সেই যুদ্ধ নয়ের দশকের গোড়া পর্যন্ত চলেছিল। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হলো চতুর্থ। এই যুদ্ধ মাথা তুলতে পারে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে। ভারত সেই যুদ্ধের অগ্রবর্তী অংশে রয়েছে। ”
স্বামী বিবেকানন্দ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর জাগরণী রূপকের সাহায্যে বলেছিলেন, ভারত শুধু রক্তেমাংসে বাড়বে না, বাড়বে আত্মশক্তিতেও। ধ্বংসের পতাকা হাতে নিয়ে নয়, শান্তি ও প্রেমের পতাকা হাতে নিয়ে। সব সু-শক্তিকে একজোট করুন। আপনার রঙ সবুজ, নীল না লাল, তা নিয়ে ভাববেন না। সব রঙকে মিশিয়ে সাদা রঙে পরিণত করুন। যে রঙ ভালোবাসার। আমাদের কাজ করতে হবে। ফলাফল ফলাফলেরই ভার নেবে। জনসেবক হওয়ার থেকে বড় পাওনা আর কিছু নেই। আমাদের প্রজাতন্ত্রের `ফার্স্ট সিটিজেন` হওয়ার থেকেও তার প্রাপ্তি অনেক বড়। জয় হিন্দ। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর