শিলিগুড়ি: আসামে গোষ্ঠী সংঘর্ষে জন্মভিটে ছেড়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ইউসুফ মেমিন। বলা হচ্ছে, তাঁর বয়স ১২৫ বছর।
হিংসার আগুনে এই বয়সে সবকিছু খুইয়ে এই বৃদ্ধ মানুষটি মানসিক ও শারীরিকভাবে একেবারেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। হিংসা কবলিত এলাকা থেকে পালিয়ে এসে এখন তিনি আলিপুরদুয়ার ২ নং ব্লকের যশোডাঙ্গার মোমিন পাড়ার শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন।
আসাম সীমান্ত পেরিয়ে এখনও বহু মানুষ এই এলাকায় আসছেন। মূলত বাকসা, উদালগুড়ি, চিরাঙ ও কোকরাঝাড় এলাকা থেকেই মানুষ আসছেন। শুক্রবারও বেশ কিছু মানুষ এদিকে চলে এসেছেন।
আলিপুরদুয়ার ২ নং ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে ত্রিপল দিয়ে অস্থায়ী ছাউনি করে দেওয়া হয়েছে। চাল, সবজি কিনে দেওয়া হয়েছে। এলাকার সব ভাষাভাষির মানুষ এই নিরাশ্রয়, দুর্গত মানুষদের সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছেন।
১২৫ বছর বয়সী ইউসুফ মেমিন বেশ কয়েকটি গোষ্ঠী সংঘর্ষের সাক্ষী। গোষ্ঠী সংঘর্ষ যাতে না হয়, তার জন্য একসময় তাঁর একটা বড় ভূমিকাও ছিলো। কিন্তু বয়সের ভারে এখন আর পারেন না।
হিংসার রেশ ছড়িয়ে পড়তেই পরিবারের অন্যান্যদের নিয়ে অনেক ঝুঁকি নিয়েই আসামের সীমানা পেরিয়ে চলে এসেছেন খেলাকাটি, দেউরা খাতুন ও অঞ্জুমান খাতুনদের মতো নিঃস্ব নারী। ঘরের যা কিছু ছিলো তা আগে লুট করে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। সন্তানদের নিয়ে গভীর জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে কোনরকমে নৌকায় নদী পার হয়ে রাতের অন্ধকারে বারোভিষাতে আশ্রয় নেন তারা।
এদের সবারই একটাই চিন্তা, কবে বাড়ি ফিরতে পারবেন। একেবারেই গরিব মানুষ। নতুন করে কিভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে সেটাও একটা বড় ভাবনা এসব মানুষের কাছে।
ভিটেমাটি হারানো এসব মানুষের অভিযোগ, আসাম সরকার সঠিক সময়ে আক্রান্ত মানুষদের রক্ষা করার উদ্যোগ নেয়নি। তাদের প্রশ্ন পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণেই থাকে, তাহলে তাদের মতো ঘরছাড়া মানুষেরা কেন ফিরতে পারছেন না?
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১২
আরডি/ সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর