ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে বিশৃঙ্খলা

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১২

কলকাতা: সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগসংক্রান্ত স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) পরীক্ষায় গণ্ডগোলোর জের ধরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো রোববার।

এদিন দুপুর আড়াইটা বেজে গেলেও পরীক্ষা শুরু হয়নি রসুলপুর ভিএম স্কুলে।



এদিকে, অন্যান্য স্কুলে পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে ততক্ষণে। ফলে ওই একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিতে অস্বীকার করেন পরীক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, পরীক্ষায় বসার জন্য চাপ দিতে থাকে এসএসসি কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে, পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র না পৌঁছানোয় পরীক্ষায় বসতে পারলেন না মালদহ মহিলা কলেজ কেন্দ্রের ৪৫০ জন পরীক্ষার্থী। বর্ধমানের রায়পুর কাশিয়ারা হাইস্কুলে প্রশ্নপত্র না পৌঁছানোর প্রতিবাদে স্কুলে বিক্ষোভ দেখান পরীক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে র‌্যাফ নামাতে হয় কেন্দ্রে।

পরীক্ষা বাতিল হয়ে যায় হাওড়া জেলার একটি পরাক্ষা কেন্দ্রেও। এসএসসি পরীক্ষা ঘিরে বিভ্রান্তি শুরু হয়েছে সকালেই। সকালে লেকটাউন কলেজসহ বেশ কিছু সেন্টারে পরীক্ষা শুরুর আগে বিভ্রান্তি ছড়ায়।

অভিযোগ, প্রবেশপত্র থাকা সত্ত্বেও কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। পরীক্ষাকেন্দ্রের দাবি, ওইসব পরীক্ষার্থীদের নাম তাদের কাছে পাঠানো হয়নি। শেষে কমিশনের তরফে ফোন করে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে বলে দেওয়া হয় বৈধ প্রবেশপত্র থাকলেই যেন পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়।

নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে পরীক্ষা শুরু হয় বাগনানের আদর্শ বিদ্যালয়ে। ফলে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় পরীক্ষাকেন্দ্রে। ডাউনলোড করা ফর্ম নিয়ে আসায় আলিপুরদুয়ার কলেজে প্রায় ১০০ জন পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এই নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় আলিপুরদুয়ার থানার আইসি-র নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী কলেজে আসে। পরে এসএসসি কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ১০ মিনিট পর পরীক্ষা শুরু হয়।

রাজ্যের বিভিন্ন কেন্দ্রে বিভিন্ন সময়ে পরীক্ষা শুরু হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া নিয়ে।

দিনভর এসএসসি পরীক্ষায় চরম বিভ্রাটের পর পাঁচটি কেন্দ্রে পূনর্বার পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। প্রশ্নপত্র দেরিতে পৌঁছানোর কারণে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়নি, শুধুমাত্র সেই কেন্দ্রগুলোতেই পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রমজান মাসের পরই পরীক্ষার দিন ফেলা হবে। দুইদিন মধ্যেই পরীক্ষার দিন ঘোষণা করা হবে বলেও এদিন জানান শিক্ষামন্ত্রী।

এর কিছুক্ষণ আগেই সাংবাদিক সম্মেলন করে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন  মণ্ডল জানান, নর্দান রিজিয়নের বাংলা পাস ও উর্দু পাসের পরীক্ষা ফের নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। পরীক্ষার দিন ঠিক করে পরীক্ষার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে কমিশনের তরফে।

ইস্টার্ন জোনের কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্রে সমস্যা দেখা দিয়েছিল, সেক্ষেত্রে রিপোর্ট পাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান। তার বক্তব্য ছিল, কোথাও স্থানীয়ভিত্তিতে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। সেই প্ররোচনায় পা দিয়ে যারা পরীক্ষা দেননি তাঁদের দায়িত্ব নেবে না কর্তৃপক্ষ।

এদিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এসএসসির চেয়ারম্যানের সাংবাদিক বৈঠকের পর তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কথা হয়েছে। যেই পাঁচটি কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে পারেননি পরীক্ষার্থীরা, সেই পাঁচটি কেন্দ্রে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার জন্য এসএসসি চেয়ারম্যানের কাছে মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।