কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বেপরোয়া অটোরিকশা চালকদের দৌরাত্ম্যে লাগাম টানতে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছেন পরিবহনমন্ত্রী মদন মিত্র।
মঙ্গলবার মহাকরণে কলকাতার সবক’টি অটো ইউনিয়নকে নিয়ে বৈঠকে বসেন পরিবহনমন্ত্রী মদন মিত্র।
অটোচালকদের পরিচয়পত্র, ইউনিফর্ম বাধ্যতামূলক করার সঙ্গে আরও কিছু বিষয়ে কড়া নজরদারি করবে সরকার। সেগুলো হলো, চলন্ত অটোতে গান বাজানো যাবে না, অটো চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলতে পারবেন না চালকরা, প্রত্যেক অটোর ভেতরে এবং বাইরে নম্বর লেখা থাকবে, ৪ জনের বেশি যাত্রী তোলা যাবে না অটোয় এবং অটোয় বসে ধূমপান করতে পারবেন না চালক।
এছাড়া চালকের অনুমোদন পেতে হলে অন্তত ২ জন ব্যক্তির রেফারেন্স লাগবে, প্রত্যেক সকালে ব্রেক, ক্লাচ, গিয়ার, টায়ার পরীক্ষা করতে হবে, প্রত্যেক অটোচালককে থানা থেকে পরিচয়পত্র দেওয়া হবে, পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে ইউনিয়ন অফিসে, চালকের নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম থাকবে এবং পোশাকে নাম ও লাইসেন্স নম্বর লেখা থাকবে।
নির্দেশনায় আরো রয়েছে, অটোচালকের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য স্থানীয় থানায় দিতে হবে, প্রত্যেক অটোয় লাগিয়ে রাখতে হবে রাজ্যের হেল্পলাইন নম্বর ১০৭৩ এবং যাত্রী প্রতারণা বন্ধ করতে হবে অটোচালকদের।
অটোরিকশায় এলইডি আলো ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আরোপ করা হয়েছে বিশেষ বিধিনিষেধ।
উল্লেখ্য, গত ১৬ আগস্ট সিঁথি-কুঠিঘাট রোডের অটোচালক সঞ্জয় দাসের অমানবিক আচরণের জেরেই বৈঠক ডাকেন মদন মিত্র।
ওইদিন ৪ বছরের মেয়ে অদ্রিকাকে নিয়ে স্কুল থেকে ফিরছিলেন সিঁথির বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা ঘোষাল। সিঁথি-কুঠিঘাট রুটের অটোতে মেয়েকে নিয়ে ওঠেন শর্মিষ্ঠা। দুই শিশুসহ মোট ৬ জন যাত্রী নিয়ে অটো ছাড়ে। কিছুদূর যাওয়ার পর সামনে উঁচু ম্যানহোল থাকায় দ্রুত ঘুরে যায় অটোটি। দ্রুততায় অটো থেকে গলে পড়ে যায় ছোট্ট আদ্রিকা।
শর্মিষ্ঠা মেয়ের হাত ধরেছিলেন। বারবার অটোচালক সঞ্জয় দাসকে অটো থামানোর জন্য অনুরোধ করতে থাকেন শর্মিষ্ঠা। কিন্তু কোনো ভ্রূক্ষেপ না করে বেশ কিছুটা পথ অদ্রিকাকে হিঁচড়ে নিয়ে যান সঞ্জয়। কিছুক্ষণ পরে শর্মিষ্ঠার হাত ফস্কে ছিটকে যায় অদ্রিকা। শেষ পর্যন্ত দিশেহারা হয়ে চালকের কলার টেনে ধরেন শর্মিষ্ঠা।
সোমবারই বিস্তারিত ঘটনা জানতে গুরুতর জখম অদ্রিকার বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন মদন মিত্র। অটোচালকের আচরণের তীব্র নিন্দা করার পাশাপাশি পরিস্থিতি আয়ত্ত্বে আনতে মঙ্গলবারই সবক’টি অটো ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠক ডাকেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১২
আরডি/ সম্পাদনা: অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর