কলকাতা : সাধু ভাষায় লেখা থাকায় বাদ পশ্চিমবঙ্গে রাখা হল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়।
বিদ্যাসাগর বাংলা চলতি ভাষায় না লিখে সাধুভাষায় লিখেছেন এতে শিশুর পঠনপাঠনে সমস্যার হচ্ছে এ কারণে রাজ্যের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুপাঠ্যে বাদ দেওয়া হলো বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়৷
রাজ্যের নতুন সিলেবাসের ওপর ভিত্তি করে ২০১৩ সাল থেকেই শিশুদের হাতে আসছে নতুন নতুন বই৷ প্রথম, তৃতীয়, পঞ্চম ও সপ্তম শ্রেণির ১৪টি বই ইতোমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে।
পরিবর্তনের শিশুপাঠ্যে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যসূচিতে ঠাঁই পেয়েছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কবিতা৷ তৃতীয় শ্রেণির জন্য রাখা হয়েছে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা ৷ এর পাশাপাশি রাখা হয়েছে এডওয়ার্ড লিয়ারের ছড়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাহিত্যিক মাইকেল অ্যান্টনির লেখার অনুবাদ।
পাঠ্যসূচি স্থির করার আগে রাজ্য সরকারের তৈরি সিলেবাস কমিটি বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েছে৷
শিশু পাঠ্য বইয়ের সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার বলেছেন, ‘শিশু মনস্তাত্তিক থেকে ভাষাতত্তবিদদের পরামর্শেই সাধু ভাষার লেখক বিদ্যাসাগরের লেখাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেছেন, বিদ্যাসাগরকে বাদ দেওয়ার ইচ্ছা তাদের নেই। যেহেতু অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্ররা চলতি বাংলা ভাষায় পড়ে, তাই সাধু ও চলতি দুটি মাধ্যমে পড়লে তারা কোনটাই ঠিক করে শিখতে পারবে না। এতে দুই মাধ্যমের প্রতি অবিচার করা হবে।
এ বিষয়ে রাজ্যে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও একমত বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে মধুসূদনের ভাষা বা শক্তির কবিতার ভাবার্থ কী বিদ্যাসাগরের সাধু ভাষার চেয়ে সহজ এমন প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষাবিদরা৷ যে বর্ণপরিচয় শিশুর প্রথম পাঠ, তার স্রষ্টার লেখাকে না রাখার যুক্তি কি শুধু ভাষার কাঠিন্য হতে পারে? হলেও তা কতটা যুক্তিযুক্ত, সিলেবাস কমিটির এহেন যুক্তি ও সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজ্যের শিক্ষকমহলে৷
বিদ্যাসাগর ফাউন্ডেশন ও বঙ্গীয় সাক্ষরতা সমিতির সম্পাদক সুবীর বন্দোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার ‘বাংলানিউজকে’ বলেন, ‘শিশু শিক্ষায় বিদ্যাসাগর বাদ! যার বর্ণপরিচয় দিয়ে শিশুদের শিক্ষার হাতে খড়ি হয়- তাই বাতিল করে দেওয়া হলো।
বাংলাদেশ সময় : ১১৩৭ ঘন্টা, নভেম্বর ০১, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা : সোহেল রহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট/সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর
Kumar.sarkerbd@gmail