কলকাতা: একটি বেসরকারি সংস্থার কয়লা উত্তোলন প্রকল্পকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার দুবরাজপুরের লোবা গ্রামে পুলিশ ও গ্রামবাসীর দফায়-দফায় সংঘর্ষে ৫ গ্রামবাসীসহ ২৭ জন পুলিশ আহত হয়েছেন৷
মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, পুলিশের গুলিতে ৫ গ্রামবাসী আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের নভেম্বরে সেখানে মাটির নিচ থেকে কয়লা উত্তোলনের কাজ করতে গেলে গ্রামবাসীরা একটি উত্তোলক যন্ত্র আটকে দেন বলে অভিযোগ৷ এরপর গ্রামেই সেই যন্ত্রটি আটকে রাখা হয়৷
এদিন সকালে ওই যন্ত্রটিকে উদ্ধার করতে বীরভূমের পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনার নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী যায়। ঘটনাস্থলে সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় ৫ থানার ওসিরাও।
এসময় প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার গ্রামবাসী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশকে ঘিরে ফেলে বলে অভিযোগ। পুলিশকে লক্ষ্য করে তির ছোঁড়া হয় বলেও অভিযোগ৷
সংঘর্ষে নলহাটি, ইলামবাজার ও রাজনগর থানার ওসি আহত হয়েছেন৷ হামলায় নলহাটি থানার ওসির কোমড়ে এবং ইলামবাজার থানার ওসির মুখে তির বিঁধেছে৷ পাথরের আঘাতে রাজনগরের ওসির মাথা ফাটে৷
পুলিশের বিরুদ্ধে পাল্টা গুলি চালানোর অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা৷ সংঘর্ষের পর এলাকা ছেড়েছে পুলিশবাহিনী।
তবে, পুলিশের বিরুদ্ধে গুলিচালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়৷
এদিন বিকেলে তিনি মহাকরণে বলেন, “পুলিশ গুলি চালায়নি৷ এমনকি গুলিবিদ্ধ হয়ে কেউ আহত হননি। গ্রামবাসীদেরই আক্রমণের মুখে পড়ে পুলিশ। পুলিশের তিনজন ওসিসহ ২৭ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন৷ পুলিশের ৯টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে উত্তেজিত জনতা৷
বামফ্রন্টের আমলে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের জন্য বেশিরভাগ জমি অধিগৃহীত হলেও পরবর্তীকালে গ্রামবাসীদের একাংশ জমি দিতে রাজি না হওয়ায় এ সমস্যা তৈরি হয়। তারা আরও বেশি ক্ষতিপূরণের দাবি তোলেন।
দুবরাজপুরের লোবা গ্রামের কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সম্পাদক জয়দীপ মজুমদার বলেন, “কয়লা উত্তোলন প্রকল্পের নাম করে সেখানে জমি জবরদখল করে রাখা হচ্ছিল।
গ্রামবাসীরা এতদিন জমি বাঁচাও কমিটি গড়ে আন্দোলন চালাচ্ছেন। গ্রামবাসীরা শিল্পের পক্ষে৷ তবে জমির ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও চাকরি না পেলে, তারা জমি দেবেন না৷”
বাংলাদেশ সময়: ২২০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর