আগরতলা (ত্রিপুরা): চূড়ান্ত সচিত্র ভোটার তালিকায় লিঙ্গ অনুপাতের ক্ষেত্রে সারা দেশের মধ্যে সেরা ত্রিপুরা। এখানে প্রতি হাজার পুরুষ ভোটারের বিপরীতে মহিলা ভোটারের সংখ্যা ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
শনিবার আগরতলায় চূড়ান্ত সচিত্র ভোটার তালিকা প্রকাশ করে এ কথা জানান রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আশুতোষ জিন্দাল।
তিনি জানান, প্রতি এক হাজার পুরুষ ভোটারের অনুপাতে ত্রিপুরায় মহিলা ভোটারের সংখ্যা নয়শ ৬৪ জন। গত সেপ্টেম্বর মাসে যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল সে অনুযায়ী এক হাজার পুরুষ ভোটারের তুলনায় মহিলা ভোটারের অনুপাত ছিল নয়শ ৫৮ জন।
এদিন তিনি চূড়ান্ত ভোটার তালিকাও প্রকাশ করেন। রাজ্যে বর্তমান ভোটার সংখ্যা ২৩ লাখ ৫২ হাজার ৫০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ লাখ ৯৭ হাজার আটশ ৪৯ জন এবং মহিলা ভোটার ১১ লাখ ৫৪ হাজার ৬৫৬ জন। গত এক বছরে রাজ্যে ভোটার বেড়েছে ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ।
এদিন রাজ্য মহাকরণে পাঁচটি স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের হাতে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা তুলে দেন আশুতোষ জিন্দাল।
রাজ্যের দশম বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি।
শুক্রবার ভারতের নির্বাচন কমিশন এ ঘোষণা দেয়। উত্তরপূর্বাঞ্চলের আরও দুটি রাজ্য মেঘালয় এবং নাগাল্যান্ডের নির্বাচনের তারিখও এদিন ঘোষণা দেওয়া হয়। মেঘালয় এবং নাগাল্যান্ডের নির্বাচন ২৩ ফেব্রুয়ারি।
তিনটি রাজ্যেরই ভোট গণনা হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি।
তিন রাজ্যের বিধানসভা ভোটের জন্য সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হতে যাচ্ছে ২১ জানুয়ারি। ২২ থেকে ২৮ জানুয়ারি মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়। মনোনয়নপত্র পরীক্ষা হবে ২৯ জানুয়ারি। ৩১ জানুয়ারি মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন।
বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর পুনরায় চলে নতুন নাম অন্তর্ভুক্তি এবং নাম বাতিলের প্রক্রিয়া।
গত ৫ জানুয়ারি রাজ্যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ভোটার তালিকা নিয়ে কয়েক দফায় অভিযোগ তোলে।
প্রথম দফায় তারা ৩৭ হাজার অভিযোগ পত্র জমা দেয় নির্বাচন কমিশনের কাছে। কংগ্রেসের অভিযোগের প্রেক্ষিতে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয় কমিশন। ঠিক হয় ১২ জানুয়ারি প্রকাশিত হবে তালিকা।
ভোটার তালিকা নিয়ে কংগ্রেসের তোলা অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুই দফায় বিশেষ পর্যবেক্ষক দল পাঠায় দিল্লির মুখ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেই পর্যবেক্ষকরাও সন্তোষজনক রিপোর্ট দেন।
শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার রাতে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা গিয়ে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে কথা বলেন। তাদের বক্তব্য ছিল ভোটার তালিকায় কারচুপি রয়েছে।
এদিকে সিপিএমের তরফে বলা হয় আমরাও নির্ভুল ভোটার তালিকা চাই। কিন্তু কংগ্রেস যা করছে তা হচ্ছে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার রাজনীতি। কারণ তারা মানুষের মুখোমুখি হতে ভয় পায়।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত দিনেই সচিত্র ভোটার তালিকা প্রকাশ করল কমিশন এদিন আশুতোষ জিন্দাল জানান, খসড়া ভোটার তালিকা থেকে ৪৬ হাজার ২৫৯ জনের নাম বাদ গেছে। কারণ সেগুলো ছিলো ভুয়া ভোটার। আবার চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় নতুন করে ৭৫ হাজার ৯০ জন নাম অন্তর্ভুক্ত কো হয়েছে।
সব মিলিয়ে খসড়া ভোটার তালিকার চেয়ে চূড়ান্ত তালিকায় ভোটার বেড়েছে ২৮ হাজার ৮৩০ জন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৩
তন্ময়/সম্পাদনা: আসিফ আজিজ, নিউজরুম এডিটর