নয়াদিল্লি: "আপনারা যাঁরা আমলা হিসাবে সৎ, তাঁরা যোগাযোগ করুন আম-আদমি পার্টির সঙ্গে। যোগ্যতা ও সততার বিচারে তাঁদের উপযুক্ত পদে বসাবে দল।
এ বার এইভাবেই দিল্লির নতুন সরকার চালানোর জন্য এসএমএস, ই-মেল পাঠিয়ে আমলা খোঁজার চেষ্টা শুরু করেছেন ভাবী মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
দিল্লি বিধানসভা ভোটে ভাল ফল করার পর সরকার গঠনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ তাঁদের চান কি না জানতে চেয়ে এসএমএস করেছিলেন আম-আদমি সুপ্রিমো। তার পর ফের সত্ আমলা পেতে বৃহস্পতিবার নতুন করে এসএমএস-কেই ভরসা করলেন তিনি।
আগামী শনিবারই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন তিনি। ইতোমধ্যে আন্না হাজারের আদর্শে অনুপ্রাণিত কেজরিওয়াল তাঁকে শপথ অনুষ্ঠানে থাকার জন্য আমন্ত্রণও পাঠিয়েছেন।
আন্না জানান, যে সব আমলা সাসপেন্ড হয়েছেন বা যাঁরা মেডিক্যালসহ অন্যান্য ভাতা এখনও পাননি, তাঁরাও এ ক্ষেত্রে আম-আদমি পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
শনিবার ২৮ ডিসেম্বর, রাজধানীর রামলীলা ময়দানে দিল্লির সপ্তম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দুপুর ১২টায় শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, কেজরিওয়াল ছাড়াও ওই দিন আরও ছয় আপ বিধায়ক মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন।
খুব সম্ভবত ৩ জানুয়ারি কেজরিওয়ালকে আস্থা ভোট নিতে হবে। দলের কোন্দলের খবর অস্বীকার করে কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, সমর্থনের প্রশ্নে কংগ্রেসে দ্বন্দ্ব তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। একই সঙ্গে ১৫ দিনের মধ্যে বিধানসভায় জনলোকপাল বিল আনার প্রতিশ্রূতি দিয়েছেন কেজরিওয়াল।
দিল্লির সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে, শপথ নেওয়ার সাত দিনের মধ্যে কেজরিওয়ালকে বিধানসভায় আস্থা ভোট নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। আপ নেতা কুমার বিশ্বাস বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, "চলতি মাসের ২৮ তারিখে কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন বলে আমরা লেফটেন্যাণ্ট গভর্নর নাজিব জংকে জানিয়েছি। গভর্নর আমাদের প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন। "
প্রথম দফায় কেজরিওয়াল ছাড়া আর যাঁরা মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন- মণীশ সিসোদিয়া, রাখি বিড়লা, সোমনাথ ভারতী, সৌরভ ভরদ্বাজ, গিরীশ সোনি এবং সত্যেন্দ্র জৈন।
অন্যদিকে আপ নেতা যোগেন্দ্র যাদব এদিন জানিয়েছেন, "কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁদের কোনও জোট হচ্ছে না। উভয় দল যৌথভাবে কোনও কর্মসূচিও গ্রহণ করছে না। তবে তাঁরা বিধানসভায় ১৮টি বিষয়ে কংগ্রেসের সমর্থন পাবেন বলে আশা করছেন। তবে বিভিন্ন্ ইস্যুতে সমর্থনের প্রশ্নে কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেবে সেটা সম্পূর্ণভাবেই ওই দলের বিষয়"।
প্রাক্তন কংগ্রেস সদস্য তথা শিল্পপতি বিনোদকুমার এবার আপের টিকিটে লক্ষ্মীনগর কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন। মন্ত্রিসভায় তাঁর ঠাঁই না হওয়ায় তিনি ক্ষুন্ন বলে যে খবর প্রকাশ হয়েছিল তা অস্বীকার করেন কেজরিওয়াল।
এ প্রসঙ্গে কেজরিওয়াল বলেন, "বিনোদকুমার আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। কোনও পদের জন্য নয়, বরং দলীয় আদর্শ মেনেই তিনি দলে যোগ দিয়েছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। মন্ত্রী না-করায় তিনি হতাশ, এমন কোনও মন্তব্যও তিনি করেননি বলে আমাকে জানিয়েছেন। "
তবে এদিন কংগ্রেসের মুখপাত্র সন্দীপ দীক্ষিত জানিয়েছেন, "সমর্থনের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আমরা চাই আপ তার নির্বাচনী প্রতিশ্রূতিগুলি পূরণ করুক। "
পূর্বতন কংগ্রেস সরকারের বিভিন্ন্ দুর্নীতির তদন্ত করা হবে বলে কেজরিওয়াল যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সে সম্পর্কে কংগ্রেস আজ কড়া বার্তা দিয়েছে। দিল্লি কংগ্রেসের প্রধান অরবিন্দর সিং লাভলি জানিয়েছেন, আপ কোনওরকম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার চেষ্টা করলে তাঁরা চুপ করে বসে থাকবেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৩,
সম্পাদনা: সুকুমার সরকার, আউটপুট এডিটর কো-অর্ডিনেশন