আগরতলা (ত্রিপুরা) : মিটতে চলেছে পাঁচ দশক ধরে চলা মুহুরিরচরের অমীমাংসিত সমস্যা। ত্রিপুরা ও বাংলাদেশ সীমান্ত মুহুরিরচর এলাকায় বসান হচ্ছে সীমান্ত পিলার।
১৯৬৩-৬৪ সালে ভারতের বিলোনিয়া অংশে মুহুরি নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। এ কারণে পরবর্তী সময়ে নদীতে চর পড়ে। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে সীমান্তে নদী থাকলে নদীর মাঝ বরাবরই হবে দুদেশের সীমানা। ৪৭ সালে দেশভাগের পর এই নীতিই কার্যকর ছিল। কিন্তু ৬৪ সালে নদীতে চর পড়ায় সমস্যা দেখা দেয়। তখন ভারতীয় কৃষকরা চরে চাষবাস করতে গেলে পাকিস্তানি সৈন্যরা বাধা দেয়। চলে গুলি।
১৯৭১ সালের আগে মুহুরিরচর নিয়ে দুদেশের মধ্যে প্রায়শই বিরোধ লাগত। মুহুরিরচর হয়ে ওঠে আন্তর্জাতিক ইস্যু। এলাকার প্রবীণ নাগরিকরা জানিয়েছেন, ৬৪ সাল থেকে ৭১ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরই এই সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলত গুলি।
শেষ পর্যন্ত ১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয় মুহুরি নদীর মাঝ বরাবরই হবে সীমান্ত। এই চুক্তি হলেও তা কার্যকর হচ্ছিল না বিভিন্ন কারণে। ফলে ত্রিপুরা-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে যতই মধুর সম্পর্ক থাকুক না কেন, এই একটি মাত্র ইস্যুতে সম্পর্কের টানাপড়েন চলত।
২০১১ সালে হাসিনা-মনমোহন বৈঠকে এই সমস্যার সমাধান হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল মুহুরিচরের পুরানো শ্মশান ভারতের দিকে পড়বে। বাকি অংশ থাকবে বাংলাদেশে।
সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসের ১৫ জানুয়ারি শুরু হয়েছে সমীক্ষার কাজ। ২১/৫৯ নম্বর পিলারের ৪৮ নং উপ-পিলারকে ভিত্তি ধরে আড়াই কিলোমিটার এলাকায় সীমান্ত চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে। এই কাজে দুদেশের জরিপ বিভাগের কর্মকর্তা এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। আপাতত কাঠের খুঁটি দিয়ে চলছে সীমানা চিহ্নিতকরণ।
এই ঘটনায় খুশি উভয়দেশের সীমান্তবাসীরা। কারণ দীর্ঘদিনের বিতর্কিত একটি সমস্যা সমাধানের পথে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৪,
সম্পাদনা: সুকুমার সরকার, আউটপুট এডিটর কো-অর্ডিনেশন/জেএম