আগরতলা (ত্রিপুরা) : ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন ১৫২ জন বেকার তরুণ। শিক্ষক শিক্ষণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৫২ জন সোমবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
সম্প্রতি রাজ্য সরকার ৪৬০৬ জনকে প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়। এ নিয়োগে কোনো ধরনের নিয়ম নীতি মানা হয় নি এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের বঞ্চিত করা হয়েছে এই অভিযোগ তুলে আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন এ ১৫২ জন।
সোমবার দুপুরে আগরতলা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষক শিক্ষণ প্রশিক্ষণগ্রহণকারী তরুণ-তরুণীরা। মিছিলটি শহরের নানা পথ তারা প্রদক্ষিণ করেন। স্লোগান দিতে দিতে তারা ত্রিপুরা হাইকোর্টে যান। সেখানে তারা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
তাদের অভিযোগ, সম্পূর্ণ নিয়ম নীতি অগ্রাহ্য করে এ নিয়োগ করা হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেকার তরুণ-তরুণীদের বঞ্চিত করে সরকারি চাকরি দেয়া হয়েছে অযোগ্যদের।
তাদের আইনজীবী অরুন কান্তি ভৌমিক জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার সমস্ত নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজনৈতিকভাবে এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার ঘোষিত ১৯৭০ সালের চাকরি আইন মানা হয় নি। সব ধরনের দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে চাকরি দেবার ক্ষেত্রে। এর বিরুদ্ধেই তারা ত্রিপুরা হাইকোর্টে আপিল করেছেন।
জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যে ৪৬০৬ জন প্রাথমিক শিক্ষক নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তারপরই ৪৬০৬ জনের নামে চাকরির নিয়োগপত্র ছাড়া হয়। ত্রিপুরাতে গত ১৭ বছর ধরে প্রাথমিক শিক্ষক পদে কোনো নিয়োগ হচ্ছে না। রাজ্য সরকার নিয়োগ প্রক্রিয়ার ঘোষণা দিতেই রাজ্যের যুবকদের মধ্যে ছিল খুশির হাওয়া। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় নিয়োগপত্র পৌঁছতেই শুরু হয় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। কারণ অনেকের ভাগ্যেই জোটে নি সরকারি চাকরির অফার। সরকারি চাকুরি নিয়ে আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠে ত্রিপুরার পরিস্থিতি।
রাজ্য কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করার দাবি করা হয়। তাদের বক্তব্য এবার সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে চরম দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে।
চাকরি ইস্যুতে রাজ্যে বেকার বিদ্রোহ চরমে উঠে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যথেচ্ছভাবে আক্রান্ত হয় সিপিএম পার্টি অফিস। আক্রান্ত হচ্ছেন সিপিএম নেতারাও। চাকুরির ইস্যুতে ত্রিপুরার যুবকরা ক্ষুব্ধ। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে এসব আক্রমনের মধ্য দিয়ে।
গত প্রায় এক মাস ধরে এই বেকার বিদ্রোহ চলার পর নতুন করে জটিলতা শুরু হতে যাচ্ছে এই চাকরি ইস্যুতে। আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের বৃহৎ অংশের বেকার। চাকরি ইস্যুতে এত ঘটনা ঘটার পরও মুখ খুলেনি রাজ্যের কোনো মন্ত্রী বা আমলা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৪