কলকাতা: বাগনানের বাসিন্দা স্বর্ণ ব্যবসায়ী শ্রীরঞ্জন মান্না (৩৬)বিষ পানে আত্মহত্যা করেছেন৷ ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ বাড়িতে ঢোকেনি৷ ঘরে বছর ছয়েক বয়সি মেয়ে৷ তখনও সে পুরোপুরি বুঝে ওঠেনি যে তার বাবা মারা গিয়েছে৷
বাবাকে খুঁজতে খুঁজতে মেয়ে মাঝেমাঝে ছটফট করছে কান্নায়৷ এরমধ্যে সম্পত্তি হাতিয়ে শুক্রবার ভোরের আলো ফুটতেই নাতনিকে ফেলে সন্তানসম্ভবা মেয়েকে নিয়ে চম্পট দিতে গিয়ে গ্রামবাসীদের হাতে ধরা পড়ল মৃতের শ্বশুর-শাশুড়ি৷
এ ঘটনা জানাজানি হতেই বাড়িটি ঘিরে ফেলেন গ্রামবাসীরা৷ থতমত খেয়ে আত্মঘাতী যুবকের শ্বশুর গ্রামবাসীদের জানান, ‘থানায় খবর দিতে যাচ্ছিলাম', তখন প্রায় একইসঙ্গে নিজের শরীরের কথা বলে মেয়ে বলে ফেলেন, তাঁরা হাসপাতালে যাচ্ছিলেন৷
তার পরই ধুন্ধুমার কাণ্ড বেঁধে যায় বাগনানের টেঁপুর গ্রামের ওই পাড়ায়৷ খবর দেওয়া হয় পুলিশে। উদ্ধার হয় হাতিয়ে নেওয়া ৩ কিলোগ্রাম সোনা ও ৫০ ভরি রুপো।
পুলিশ অভিযুক্তদের থানায় নিয়ে গেলে বাধা দেন গ্রামবাসীরা। তাদের বাড়িতে আটকে রাখা হয়৷ সেখানেই সকাল থেকে চলে জিজ্ঞাসাবাদ৷ অন্যদিকে, বাড়ি ঘিরে রাখে ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা৷
তাঁদের ধারণা যুবকের শ্বশুর পাঁশকুড়ার বাসিন্দা চন্দন ধাড়া ও তাঁর পরিবারের প্ররোচনাতেই আত্মঘাতী হয়েছেন যুবক৷ তাই গ্রামবাসীর যুক্তি, ওই বাড়িতে তাঁদের সামনেই হবে বিচার৷
তার মধ্যেই শ্রীরঞ্জনের ভাই অষ্ট মান্না খুনের অভিযোগ তুলেছেন দাদার শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে৷ গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
পুলিশ সূত্রে খবর, দীর্ঘদিনের স্বর্ণ ব্যবসায়ী শ্রীরঞ্জন মান্না ভালো লোক বলেই এলাকায় পরিচিত। ঘরোয়া-বিবাদও কোনওকালে তেমন ছিল না বলেই জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা৷ তার পরও এমন ঘটনায় রীতিমতো বিস্মিত পাড়ার লোক৷
শ্রীরঞ্জনের দোকানের ম্যানেজার রঞ্জিত মণ্ডল জানান, ৩ কিলোগ্রাম সোনা ও ৫০ ভরি রুপো নিয়ে আচমকাই শ্রীরঞ্জন বুধবার রাতে বেরিয়ে যান৷ মালিক বলে সেভাবে জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারেননি রঞ্জিতকে৷
তাঁর কথায়, শ্রীরঞ্জন আগে কখনও এমন করেননি৷ জিজ্ঞাসা করায় শুধু বলেছিলেন, ‘নিয়ে যাচ্ছি, কিছুদিনের মধ্যে ফেরত দিয়ে যাব৷' তাতে সন্দেহজনক কোনও কিছুই মনে হয়নি দোকানের কর্মচারীদেরও৷
পুলিশের সন্দেহ, গয়না বন্ধক রেখে টাকা চেয়েছিলেন আত্মঘাতী যুবকের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা৷ গয়নাগুলি হয়তো দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন তাঁরা৷
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৪