আগরতলা (ত্রিপুরা): প্রকৃতি থেকে দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে শকুন। একই অবস্থা উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য ত্রিপুরাতেও।
তীক্ষ্ম দৃষ্টির অধিকারী এই শিকারি পাখিকে বাঁচিয়ে রাখার উদ্যোগ নিল রাজ্যের বন দপ্তর। ঘোষণা দেওয়া হয়েছে সংরক্ষিত এলাকায় প্রজনন ঘটিয়ে বাড়ানো হবে শকুনের সংখ্যা।
রাজ্যের মুখ্য ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন ড. অতুল কুমার গুপ্তা বাংলানিউজকে জানান, শকুনের বংশ বৃদ্ধি করতে রাজ্যের বন দপ্তর একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আগরতলার কাছে অবস্থিত সিপাহিজলা অভয়ারণ্য এবং চিড়িয়াখানায় বন্ধ খাঁচার মধ্যে শকুনের প্রজনন ঘটিয়ে বংশ বৃদ্ধি করা হবে।
প্রকল্পে বোম্বে ন্যাচ্যারাল হিস্ট্রি সোসাইটি (বিএনএইচএস) রাজ্যকে কারিগরি সহায়তা দেবে বলে সম্মতি দিয়েছে বলে জানান ড. অতুল গুপ্তা।
তিনি আরো জানান, ক্যামব্রিজের ওয়ার্ল্ড কনজারভেশন মনিটরিং সেন্টার রাজ্যের বন দপ্তরকে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া পাখী শকুনে বংশ বিস্তারও রয়েছে।
সংস্থাটি বলেছে, এই বিপন্ন প্রায় প্রাণীটিকে যাতে ডাইক্লোফেনিক ওষুধ মিশ্রিত কোনো মাংস খেতে দেওয়া না হয়। বিভিন্ন গৃহপালিত গবাদি পশুকে দেওয়া এই ব্যাথা উপশমকারী ওষুধ মাংসপেশীতে কাজ করে।
গবাদিপশু মারা যাওয়ার পর যদি শকুন ওই মাংস খায় তবে তার দেহেও ডাইক্লোফেনিক প্রবেশ করে। যা শকুনের প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
বন কর্মকতা ড. অতুল গুপ্তা বলেন, আজকাল পশুদের উপর বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করায় প্রভাব পড়ছে শকুনের বংশবৃদ্ধিতে।
শকুনকে বলা হয় প্রকৃতির ঝাড়ুদার। পাখিটি মরা পশুর মাংস খেয়ে তা পরিবেশ-প্রতিবেশকে বিয়োজিত হতে সাহায্য করে। এ কারণে পাখিটি রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছে ত্রিপুরার বন দপ্তর।
অতুল গুপ্তা জানান, সম্প্রতি পক্ষী শুমারিতে দেখা গেছে, রাজ্যে মাত্র ৫৫টি শকুন রয়েছে। অথচ দুই দশক আগেও এর সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০ হাজার। দ্রুত কমছে এই পাখির সংখ্যা।
এখনই কিছু না করা গেলে অদূর ভবিষ্যতে প্রকৃতি থেকে তা ফুরিয়ে যাবে বলেও মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৩