সোজা ব্যাটে খেলাটাই ছিল ক্রিকেট কৌলিন্য। কেউ এলোপাথাড়ি ব্যাট চালালে তাকে অভদ্র-অসভ্য বলা হতো।
কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে কংগ্রেস ন্যাশনালিস্ট পার্টি গড়লেন শারদ পাওয়ার। দলের শেকড় গড়লেন মহারাষ্ট্রেই। ২০০৪-এ মনমোন সিং প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর শারদ আরও আঘাত পেলেন নিজের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য। কংগ্রেস ছাড়াই যে তাঁর উচিত হয়নি, সেটা হারে হারে টের পেলেন। এবার মনমোহন নয়, দলের সামনে রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস যদি সরকার গড়ে তিনিই প্রধানমন্ত্রী। তাহলে শারদের কী আর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোন চান্সই নেই। আছে। ক্রিকেটের মতোই রাজনীতি বড় অনিশ্চিত। জিততে জিততে হারা, হারতে হারতে জেতাও বিচিত্র নয়। প্রধানমন্ত্রীত্বের কুর্শি ধরতে গিয়েও পিছলেছেন শারদ। তাই বলে হাল ছাড়বেন কেন?
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্যই নতুন দল গড়া। তা হওয়া না গেলে দলটার মানে কী। তা বলে তো চুপ করে বসে থাকা যায় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। ধীরে ধীরে প্রধানমন্ত্রিত্বের দিকে এগোচ্ছেন। অভিজ্ঞ প্রবীণ নেতা হয়ে, হাত গুটিয়ে থাকতে পারেন না শারদ।
নরেন্দ্র মোদী টোকা দিয়েছিলেন শারদকে। বলেছিলেন, কংগ্রেস তো আপনাকে কিছু দিল না। বিজেপির শরিক হয়ে দেখুন আপনাকে কোথায় নিয়ে যাই। কথায় চিড়ে ভেজেনি। মোদী কী দিতে পারেন শারদকে। মোদী কী শারদকে প্রধানমন্ত্রীর গদী ছেড়ে দিতে পারবেন। শারদ যেটা চান সেটার জন্য মোদী তাঁর দলের প্রবীনতম নেতা লালকৃষ্ণ আদভানিকে পর্যন্ত ছুঁড়ে ফেলেছেন। নিজের দলেই মোদীকে নিয়ে বিতর্কের ঝড়। মোদীর দরকার, শারদের ন্যাশনালিটি কংগ্রেস পার্টির আসন। ২০০৯-এ তারা পায় ৯টি। এবার বাড়তে পারে। যদি ১৫টির বেশি পায়, মোদীর এলডিএ সরকার গড়তে কাজে লাগবে।
মোদীর চাল ধরতে অসুবিধে হয়নি শারদের। তিনি ঝুঁকেছেন তৃতীয় ফ্রন্টের দিকে। কংগ্রেস বা বিজেপি যদি সরকার গড়তে না পারে, সুযোগ পাবে তৃতীয় ফ্রন্ট। ১১টি দল, তৃতীয় বিকল্প নিয়ে বৈঠক করেছে। শারদ তাতে যোগ দেননি। আগে থাকতে কোনও কমিটমেন্টে যেতে তিনি রাজি নন। নির্বাচনের পর পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা। তৃতীয় জোটে এখনও কাউকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রোজেক্ট করা হয়নি। কেউ দাবিও জানাননি। শারদের প্লান, তৃতীয় বিকল্প সরকার গড়তে চাইলে, কংগ্রেসের সাহায্য লাগবে। কংগ্রেস যাতে সমর্থন দেয় তার ব্যবস্থা তিনি করবেন। পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীর পদটি তাঁকে দিতে হবে। এটা অনেক দূরের স্বপ্ন। তবু স্বপ্ন ছাড়া তো মানুষ বাঁচে না। প্রধানমন্ত্রীর পাওয়ারের খোয়াব ছাড়া শারদই বা বাঁচবেন কীভাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৪