ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

আমি বাংলার মানুষের পাহারাদার

সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২০ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৪
আমি বাংলার মানুষের পাহারাদার

দমদম থেকে: কংগ্রেস ও মুখ্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সিপিএমের তুলনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারও বিজেপিনেতা নরেন্দ্র মোদীকে কড়া সমালোচনা করলেন। এদিন তিনি ৩টি জনসভার মধ্যে সর্বশেষ জনসভাটি করেন দমদম সেণ্ট্রাল জেলের কাছে ময়দানে।



দমদম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অধ্যাপক সৌগত রায়ের সমর্থনে দমদম সেণ্ট্রাল জেল ময়দান ও বরানগরে সভা করেন তৃণমূলনেত্রী। আর বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীর সমর্থনে টিটাগড়ের ছাইগাদার মাঠে জনসভা করেন মমতা।

কংগ্রেস এবং সিপিএমের তুলনায় বৃহস্পতিবারের ৩টি জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী ঝাঁঝালো কণ্ঠে মোদীকে তুলোধনা করেন। মমতা বলেন, মোদী সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছেন, বিভেদ ছড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, বাংলার মানুষ বিজেপিকে যোগ্য জবাব দেবে।

মমতা বলেন, ১৬ মে ভোটবাক্স খুললে পদ্মফুল নয়, চোখে সর্ষের ফুল দেখবেন নরেন্দ্র মোদী৷ বেরোবে শুধু জোড়াফুল৷ বাংলার মাটিতে আমি মানুষের পাহারাদার৷ ক্ষমতা থাকলে এখানকার সম্প্রীতি নষ্ট করুন৷ সবার আগে আমাকে তাড়িয়ে দেখান।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি চলবে না৷ এই বাংলায় দাঙ্গাকারীদের কোনও জায়গা নেই৷ শরণার্থী তো আসলে মোদিই৷ ‘টাকা বিলিয়ে আর দেদারছে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে বিজেপির নেতা বানানো হচ্ছে।

মমতা বলেন, ভারতে এ ধরনের রাজনীতি কখনও ছিল না।

অবশ্য নরেন্দ্র মোদীর প্রতি মমতার তোপের অন্যতম কারণ হলো, বুধবার পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁও ও বারাসাতের জনসভায় তিনি মতুয়া সম্প্রদায়ের কয়েক লাখ লোককে নাগরিকত্ব দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। এই মতুয়া সম্প্রদায়ের বেশিরভাগই বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার মানুষ।

বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী মতুয়াদের বিষয়ে এই অঙ্গীকার করে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস অর্থাৎ মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কপালে ভাঁজ ফেলে দেন। মতুয়া সম্প্রদায়ের গুরু পি আর ঠাকুর পরিবারের পূর্বপুরুষের বাস গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে। বাংলাদেশসহ ভারতে বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছেন ওড়াকান্দি ঠাকুর পরিবারের শিষ্য এই মতুয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা। এই ঠাকুর পরিবারের অনেক সদস্য বাস করেন উত্তর ২৪ পরগণা জেলার ঠাকুরনগরে।

এই ঠাকুর পরিবার থেকে ভারতের ষষ্ঠদশ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর। তিনি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মমতা সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রী। মতুয়া সম্প্রদায়ের কয়েক লাখ লোক এখনও ভোটকার্ড পাননি। অর্থাৎ ভারতের এবারের কঠিন লড়াইয়ের মুখে এসে মমতার দিকে বুধবার তাসের ট্রামকার্ডটা ছুড়ে দেন মোদী।

মমতা আরও বলেন, বাংলায় বিজেপি বলে কিছু নেই৷ শুধু টাকা দিয়ে গ্যাসবেলুন ফোলানো হয়েছে৷ ভোটের পরই  চুপসে যাবে। বিজেপি লোকসভা ভোটে শুধু প্রচারের জন্যই প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১০০ দিনের কাজ হোক বা পরিকল্পনা খাতে বরাদ্দ, উন্নয়নের সব ক্ষেত্রেই পিছিয়ে রয়েছে গুজরাট৷ কিন্তু এমনভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে যে, গুজরাটেই দেশের মডেল হবে। আর এই কাজটা নিপুণভাবে করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে৷ অর্থের বিনিময়ে এই প্রচারই নেতা তৈরি করে দিচেছ দেশের মানুষের সামনে৷              

দমদম সেণ্ট্রাল জেল, টিটাগড়ের ছাইগাদার মাঠ ও বরানগর প্রতিটি সভা থেকেই বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএমের ‘অশুভ' জোটকে তুলোধোনা করেন তিনি৷ কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক আচরণের অভিযোগ তোলেন তৃণমূলনেত্রী৷

তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে দিল্লি৷ এনাফ ইজ এনাফ৷" কাজের প্রতিযোগিতায় না পেরে এখন শুধু নালিশ করে চলেছে কংগ্রেস৷ আর সিপিএমের অবস্থা ‘কানামাছি ভোঁ ভোঁ, যাকে পাবি তাকে ছোঁ'-এর মতো বলে কটাক্ষ করেন তৃণমূলনেত্রী৷ কখনও কংগ্রেস আবার কখনও বিজেপিকে ধরে দিল্লিতে যেতে চাইছে৷

মমতা বলেন, এমনভাবে ভোট দিন, যাতে বাংলার অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারি৷ এবারের নির্বাচনে নতুন প্রজন্মকে ভোটে এগিয়ে দিয়েছি৷ সে প্রসঙ্গ তুলে তিনি জানান, ছাত্র রাজনীতি করার সময় থেকেই পরের প্রজন্মকে তৈরি করে দিয়েছেন৷

** মমতাকে বিশ্বাসঘাতক বললেন রাহুল

বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, ০২০৫ মে ০৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।