বিজেপি ঝড়ে উড়ল কংগ্রেস। এলোমেলো আঞ্চলিক দল।
১৯৯৬-এ একাদশ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি সব থেকে বেশি আসন পেয়ে অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রধানমন্ত্রিত্বে সরকার গঠন করলেও স্থায়িত্ব পায়নি। মাত্র ১৬ দিনে আয়ু শেষ। ১৯৯৮-তে দ্বাদশ লোকসভা নির্বাচনে ফের জিতে অটল বিহারী প্রধানমন্ত্রী হলেও বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। ২০০৪ আর ২০০৯-এ কংগ্রেস সরকার গঠন করেছে শরিকদেরও সাহায্য নিয়ে। এবার ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করে বিজেপি ক্ষমতায়।
২৮টি রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপির সাফল্য তুলনাতীত। গতবার তারা পেয়েছিল মাত্র ৬ শতাংশ ভোট এবার ২০ শতাংশ ছাপিয়েছে। আসনের হিসেবে তারা দ্বিতীয় স্থানে। কংগ্রেসের আসন কমেছে। ভোট আশ্চর্য্যজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে। বামদের অবস্থা সব থেকে খারাপ। ভোটের পার্সেন্টেজ খুব একটা না কমলেও পাওয়া আসন ধরে রাখতে পারেনি। বামদের ভোট ৩০ শতাংশ।
২০০৯-এ কংগ্রেস আর তৃণমূল জোট বেঁধে নড়েছিল। এবার তারা এককভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। সেবার বিজেপি ছিল নিতান্তই দুর্বল। এবার বাম আর কংগ্রেসকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে তারা বিরাট চ্যালেঞ্জ।
বামদের ফল যে এত খারাপ, তার কারণ কিন্তু তৃণমূল নয়; বিজেপি। বামদের আশা ছিল বিজেপি তৃণমূলের ভোট কেটে তাদের জয়ের রাস্তা প্রশস্ত করবে। হয়েছে ঠিক উল্টো। বিজেপি থাবা বসিয়েছে বাম ভোটব্যাংকে। তিন বছরের শাসনে তৃণমূল মানুষের স্বপ্নভঙ্গ করেছে। জনতা বিকল্প শক্তি খুঁজেছে। বামদের উপর আস্থা রাখতে না পেরে তারা বিজেপির দিকে ঝুঁকেছে। এই ঝোঁকটা অবশ্যই বাড়িয়েছে নরেন্দ্র দামেদর ভাই মোদী। তিনি বারবার পশ্চিমবঙ্গ সফর করে বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি ছাড়া দেশে আর কোনো নেতা নেই। উন্নয়নের গ্যারান্টি দেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র তার হাতেই। নতুন প্রজন্ম তাকে বিশ্বাস করেছে। মমতার আসন বাড়লেও রাজনৈতিক ক্ষমতা কমেছে। নতুন সরকারের ভিত এতটাই শক্ত, তাকে ব্ল্যাকমেল করে নড়ায় অসম্ভব। উপরন্তু আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ঠেকাতে যে খুব কঠিন, তিনি হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছেন।