ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

বিজেপি রুখতে তৃণমূল-সিপিএম কাছাকাছি!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৯ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৪
বিজেপি রুখতে তৃণমূল-সিপিএম কাছাকাছি! সংগৃহীত

কলকতা: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিরোধী দল বামফ্রন্টের সন্ত্রাসের অভিযোগ অনেক দিনের। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের অনেক বাম কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে বামফ্রন্টের শরিক বিভিন্ন দলের তরফ থেকে।



যদিও এ ব্যাপারে নিজেদের জড়িত থাকা বা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার বিষয় বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন শাসক দলের নেতারা।

এ ব্যাপারে অনুষ্ঠানিক অভিযোগ দেওয়ার জন্য অনেকবার চেষ্টা করেও সফল হননি বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। তবে এই প্রথম রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান তথা সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর সাক্ষাত করেন।

তৃণমূল ও বাম নেতাদের এই বৈঠক নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনা এখন তুঙ্গে।    

সিপিএম নেতারা বৈঠকে গত সাড়ে তিন বছরে তাদের যত কর্মী ‘সন্ত্রাসের কারণে’ ঘরছাড়া হয়েছে তাদের বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।

বৈঠকের পর তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, বাম কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে তৃণমূল কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না। পুলিশও সাহায্য করবে।

পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল ও বিরোধী দলের এই ‘কাছাকাছি’ আসার ক্ষেত্রে অনেকে মনে করেন, বিগত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপির উত্থান একটি ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করেছে।

অনেকেই মনে করছেন, বিজেপি রুখতে পশ্চিমবঙ্গে কাছাকাছি আসছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং সিপিএম।

বিগত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে মাত্র ২টি লোকসভা আসন পেয়ে খুবই দুর্বল জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে সিপিএম। অপরদিকে ৩৪টি আসন পেয়ে নিজেদের শক্তি বাড়ালেও তলায় তলায় যে পায়ের তলার মাটি বেশ কিছুটা আলগা হয়ে গেছে তার নজির ভোটের হিসেবে পেয়ে গেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব।

তাই বিগত দিনে বার বার দেখা করতে চাইলেও বামেদের একপ্রকার এড়িয়েই যেতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের পড়ে তিনি বুঝতে পেরেছেন বামফ্রন্ট দুর্বল হওয়ার আরেক অর্থ বিজেপির শক্তি বৃদ্ধি হওয়া। আর এই শক্তি বৃদ্ধি যে তৃণমূলের ভোট বাক্সে প্রভাব ফেলবে সেটা বিগত লোকসভার ভোটের চরিত্র বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায়।

তবে শাসক এবং বিরোধী দলের এই বৈঠক নিয়ে দুই পক্ষের সমর্থকরাই কিছুটা দ্বিধা বিভক্ত। পশ্চিমবঙ্গের বাম সমর্থকরা অনেকেই মনে করছেন, এটা একপ্রকার শাসক দলের কাছে নতি শিকার। আর সিপিএম সম্পর্কে নরম মনোভাব নেওয়ায় কিছুটা ক্ষুব্ধ তলার তৃণমূল কর্মীরা।

তবে সমর্থকরা অন্যভাবে দেখলেও বামদের ক্ষেত্রে এই বৈঠকের ফলাফল বেশ সাফল্যজনক। বলা যেতে পারে, তারা এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছেন।

একদিকে তারা প্রশাসনের সাহায্যের আশ্বাস পেয়েছেন, অন্যদিকে শাসক দল স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে গত সাড়ে তিন বছরে বেশ কিছু বাম কর্মী-সমর্থক ঘর ছাড়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।