ঢাকা: কিছু কিছু মানুষের কাছ থেকে পাওয়া পথ নির্দেশ জীবনে যে কোনো আদেশের থেকে কয়েক’শ গুশ শক্তিমান হয়। দেশসেরা নিউজপোর্টাল বাংলানিউজের জন্মদিনে তার অফিসে বসে এই অনুভবটাই প্রথমে মাথায় এলো।
ঘটনাচক্রে এই জন্মদিনে কলকাতা প্রতিবেদক বাংলানিউজের অফিসে হাজির। বিগত বছরের জন্মদিনটি দেখেছিলাম কলকাতায় বসে। ছবি এবং লেখায়।
ব্যক্তি জীবনে আমি জন্মদিন পালনে খুব একটা উৎসাহী নই। আমার কাছে এই দিনটা আরও পাঁচটা দিনের মতোই। শুধু বিশেষ একটি কারণে।
এদিনে আরও একবার আমি নিজেকে নিজের সামনে দাঁড় করাতে পারি। প্রশ্ন করতে পারি ফেলে আসা একটা বছরে কতটা এগোলাম বা কতোটা পিছিয়েছি। কী নতুন শিখলাম আর এখনও কী বাকি রয়ে গেছে।
বাংলানিউজের জন্মদিনেও সেই হিসেবের খাতার পাতা উল্টাবার আবার একটা সুযোগ এসে গেলো। বাংলানিউউজে কলকাতা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরুর আগেও আমি সাংবাদিকতা করেছি।
কিন্তু বাংলানিউজে এসে যেটা শিখতে শুরু করলাম সেটাকে শুধুমাত্র সাংবাদিকতা বললে আমার মনে হয় ভুল হবে! যেনো ২৪ ঘণ্টার সাংবাদিকে পরিণত হলাম।
আগে যেখানে গোটা দিনে একটি বা দুটি নিউজ পাঠিয়ে থেমে থাকতাম, পরদিন তা বাংলাদেশে প্রকাশিত হবে।
কিন্তু বাংলানিউজে যুক্ত হবার পর দেখলাম খবর এখানে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটছে। খবর পাঠানোর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তা প্রকাশ হচ্ছে সাইটে। এ দেখে সেই উৎসাহ আরও বেড়ে গেল। পরিণত হলাম সাধারণ সাংবাদিক থেকে বাংলানিউজের একজন ২৪ ঘণ্টার সংবাদ সৈনিকে।
আর এই পথে অনভিজ্ঞ এক যাত্রীকে পথ নির্দেশ করে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন।
তার পথ নির্দেশনা সব সময় নির্দেশের সীমা ভেঙে চেতনার অন্য কোনো স্তরে গিয়ে স্পর্শ করেছে।
আমার জীবনে শিক্ষকদের প্রভাব ভীষণ বেশি। আজও প্রতিটি মুহূর্তে আমার শিক্ষকদের আমি অনুভব পারি। তবে বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ বোধহয় আমার মত এত কম মেধাবী ছাত্র পাননি!
কলকাতা থেকে পাঠানো খবরগুলো পাঠকদের সামান্য ভালো লাগলেও তা সম্পূর্ণ তারই কৃতিত্ব।
বাংলাদেশে অনেকের কাছেই তিনি সাংবাদিকতায় পিতৃতুল্য। কিন্তু আমি শিক্ষকদের কোনো তুলনাতেই তুলতে চাই না।
ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতি বলে গুরু পিতারও অধিক। সে কারণেই গুরুর আদেশে নিজের বুড়ো আঙ্গুল কেটে দিয়েছিলেন একলব্য।
বাংলানিউজের মাধ্যমে দ্বিতীয় প্রাপ্তিটিও বেশ বড়। এত সহকর্মী এবং তাদের ভালবাসা এবং অক্লান্ত সহযোগিতা আমাকে কর্মক্ষেত্রের নতুন এক ভাষা শিখিয়েছে। যা আমাকে আগামীতে চলতে সাহায্য করবে।
তবে এই লেখা শেষ করতে গিয়ে একজনের কথা ভীষণ ভাবে মনে পড়ছে। গেলবার বাংলাদেশে এসে কথা দিয়েছিলাম আবার দেখা হবে। গত রমজানে একসঙ্গে ইফতারও খেয়েছি। এবারও তার আসনে বারবার মন ছুটে যাচ্ছে-কিন্তু তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
আজকের দিনে প্রার্থনা করছি-যেনো রনি ভাই শান্তিতে থাকুন।
আসলে একটা বছর কেটে যাওয়া মানে তো শুধু পাওয়া নয়, কিছুটা হারানোও বটে। অতীতকে মনে রেখে এগিয়ে যাওয়ার একটা মাইলস্টোনের নামই তো জন্মদিন।
আর বাংলানিউজের জন্মদিনে আমার সব প্রিয় সহকর্মীদের এগিয়ে যাবার জন্য অনেক অনেক অভিনন্দন।
শুধু আমার নয় কলকাতার পাঠকদের পক্ষ থেকেও। আশা করি আগামী দিনগুলোতে আমারা অবার মহাসমারোহে এই দিনটি পালন করতে পারবো।
সঙ্গে অভিনন্দন পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বাংলানিউজের পাঠকদের, যারা গেলো বছরগুলোতে ২৪ ঘণ্টা ৭ দিন বাংলানিউজের সঙ্গে ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৪