ঢাকা: ‘সীমান্তে শান্তির সুবাতাস বজায় থাকুক’ এই আশাবাদ ব্যক্ত করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করলেন। অর্থাৎ সীমান্ত নিয়ে ভারতের মনোভাবটা তিনি তার পড়শি দেশের নেতাকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন।
গত মে মাসের শেষার্ধে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর কোন আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি কোন নেতার সঙ্গে মোদীর এটাই প্রথম বৈঠক। সীমান্ত নিয়ে যে সমস্যা বিরাজ করছে তার ইতি ঘটাতে দুই দেশ প্রত্যয় ব্যক্ত করে।
ব্রাজিলে দুই নেতার ওই বৈঠকটির সময় সীমা বেঁধে দেওয়া ছিল ৪০ মিনিট। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্থায়ীত্ব ঘটে ৮০ মিনিট। ফোর্টালেজায় পৌছনোর তিনঘণ্টার মধ্যেই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী।
ওই বৈঠকেই চীনা প্রেসিডেন্ট জিনপিং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আসছে নভেম্বরে এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয়(অ্যাপেক) শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য বেইজিং সফরের আমন্ত্রণ জানান। এরপর মোদী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।
বৈঠকের পর মোদী ট্যুইটে তাঁর বৈঠকের ছবি পোস্ট করে লেখেন, চীনা রাষ্ট্রপতি মিঃ শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তিনি খুবই ইতিবাচক বৈঠক করেছেন। তিনি লেখেন আমরা ব্যাপকভিত্তিক আলোচনা করেছি।
অবশ্য চলতি বছর ভারতের সাধারণ নির্বাচনের প্রচারাভিযানকালে মোদী সীমান্ত নিয়ে চীনকে কড়া হুশিয়ারী দিয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন। তিনি চীনকে সম্প্রসারণবাদ মনোভাবাপন্ন বলে আখ্যায়িত করেন।
কিন্তু ব্রাজিলীয় শহর ফোর্টালেজায় ষষ্ঠ ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক্কালে মোদী তাঁরবার্তায কূটনৈতিক দূরদর্শীতার পরিচয় দিলেন। ‘ব্রিকস’ বা ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা উদীয়মান অর্থনীতি গ্রুপ।
গত ৫ দশক ধরে চীনের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লি অভিযোগ করে আসছে বেইজিং ৩৮ হাজার কিলোমিটার ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে। অপরদিকে বেইজিং অরুনাচল প্রদেশের ৯০ হাজার কিলোমিটার ভূখণ্ড তাদের বলে দাবি করে আসছে।
গত বছর চীনা সৈন্যরা লাদাখ অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করেছে বলে ভারত অভিযোগ আনলে সীমান্তে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। চীন তা অস্বীকার করে জানায় ভারতই আগ্রাসন ভাবাপন্ন হয়ে সীমান্তে টহল দিচ্ছে।
সরকারী মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিন মোদী-শি আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে সম্পর্কের অবনতি পরিহার করা। দুই নেতাই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বাতাবরণে ঘনিষ্টভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রতিবেশী দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠককে সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং ফলপ্রসূ বলেই বর্ণনা করেন সৈয়দ আকবরউদ্দিন।
তিনি বলেন, এছাড়া চীন হচ্ছে ভারতের বৃহত্তম ব্যবসায়ীক অংশীদার। গত বছর এপ্রিল-ডিসেম্বরে দুই দেশের যৌথ ব্যবসার পরিমাণ ছিল প্রায় ৫শ’ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৪