কলকাতা: জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের ৩৯তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে কলকাতায় বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশকে তুলে ধরতে আলোকচিত্র ও স্মারক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
কলাকাতার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন (আইসিসিআর) এর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেন্টারের নন্দলাল বোস প্রদর্শনশালায় ‘ইতিহাস কথা কয়’ শীর্ষক এ প্রদর্শনী চলছে।
প্রদর্শনীর মূল উদ্যোক্তা কলকাতাস্থিত বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন এবং আইসিসিআর। বাংলাদেশের বিখ্যাত চিত্রসংগ্রাহক সাহাবুদ্দিন মজুমদারের সংগৃহীত আলোকচিত্র এবং মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাসের বিভিন্ন মূল্যবান স্মারক প্রদর্শনীতে দেখানো হচ্ছে।
এতে ১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত এ ভূখণ্ডের ইতিহাসের সংগ্রহ করা ১ হাজার ৭৫০টি ছবির মধ্যে ৩২০টি ছবির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রদর্শনীতে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক হিসেবে ১৯৭১ সালের শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গ রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিমান বন্দরের কাছে এক বধ্যভূমি থেকে এই অঙ্গ-প্রতঙ্গগুলি সংগ্রহ করা হয়েছে বলে প্রদর্শনীর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় জানান এর সংগ্রাহক সাহাবুদ্দিন মজুমদার।
তিনি জানান, প্রায় ৮ বছর আগে শহিদদের এ দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে স্থানীয় শীল সম্প্রদায়ের ৭৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে গুলি করে হত্যার পর মাটিতে পুঁতে রাখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা।
কলকাতার আইসিসিআর’র এ প্রদর্শনীটি তার ৩৭৫তম প্রদর্শনী উল্লেখ করে সংগ্রাহক সাহাবুদ্দিন মজুমদার জানান, এর আগে ২০১২ সালে কলকাতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিলো।
ত্রিপুরায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের আমন্ত্রণে ২৭টি ব্লকে এই প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়। এছাড়া নেপাল এবং ভুটানেও এই প্রদর্শনী হয়েছে বলে জানান সংগ্রাহক সাহাবুদ্দিন মজুমদার।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মো. সানাউল্লাহ, মুফিজুর রহমান, আলি আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা পদকপ্রাপ্ত পঙ্কজ সাহা, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক অনুপম সেন, আইসিসিআর এর রিজিওনাল পরিচালক রাজশ্রী বেহেরা এবং বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম।
কেন এই আলোকচিত্রের সংগ্রহ- বাংলানিউজের প্রশ্নের উত্তরে সাহাবুদ্দিন মজুমদার বলেন, তার মনে হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর ইতিহাসকে একদল দুস্কৃতকারী মুছে দেওয়ার চেষ্টা করবে। তার সঙ্গে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করবে বাঙালির গর্বের অতীতকে। সে কারণেই তিনি আলোকচিত্রগুলি সংগ্রহ করতে শুরু করেছিলেন।
এ সময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের শাস্তির প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।
মৌলবাদী শক্তিকে রুখতে পারলেই দক্ষিণ এশিয়া গোটা পৃথিবীর মধ্যে সব থেকে বড় শক্তিতে পরিণত হবে বলে বিশ্বাস সাহাবুদ্দিন মজুমদারের।
অনুষ্ঠানে সংগ্রাহক সাহাবুদ্দিন মজুমদারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম বলেন, তিনি একেবারে অন্যভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সংগ্রহ করেছেন।
আলোকচিত্র স্থান-কাল-পাত্রকে উজ্জীবিত করে তোলে। নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধকে আরও বেশি করে পরিচিত করে তুলতে এ আলোকচিত্র প্রদর্শনী যথেষ্ট সাহায্য করবে, যোগ করেন আবিদা ইসলাম।
আগামী ২৭ আগস্ট পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চলবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, ২২ আগস্ট , ২০১৪