কলকাতা: শুধু বর্ধমান নয়, জঙ্গিজাল ছড়িয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। বর্ধমান বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্তে নেমে এমনটাই মনে করছে এন আই এ।
এ ঘটনার সূত্র ধরেই শান্তিনিকেতনের কাছাকাছি বোলপুর-লাগোয়া মুলুক গ্রামে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আরেকটি আস্তানার সন্ধান পেল গোয়েন্দারা। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে নাইন এম এম পিস্তলের গুলি।
এখানেও উঠে এসেছে বর্ধমান বিস্ফোরণকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত শিমুলিয়ার একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম। বর্ধমানকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন পলাতক হাবিবুর শেখের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে গোয়েন্দারা।
বাড়ির লোকদের জেরা করে জানা গেছে, হাবিবুর শেখ বাড়ির নারীদের বাধ্যতামূলক বোরখা পরার নির্দেশ দিয়েই থেমে থাকেননি, বাড়িতে টেলিভিশন না দেখারও ফতোয়া জারি করেছিল।
ওই অঞ্চলেই আরেকটি জঙ্গি ঘাঁটির সন্ধান পেয়েছেন গোয়েন্দারা। সেই বাড়ির মালিক ডালিম শেখ পলাতক। বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে বন্ধুকের গুলি। তবে এলাকার মানুষ মনে করছে, বর্ধমানের খাগড়াগড়ের মতোই বোলপুরের মুলুক গ্রামেও বড় মাপের ডেরা বেঁধে ছিল জঙ্গিরা।
এর আগে কলকাতার মেটিয়াব্রুজ এবং বড়বাজার অঞ্চলে বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালায় গোয়েন্দারা। বর্ধমান বিস্ফোরণকাণ্ডে জড়িত জঙ্গিরা কলকাতার এই দুটি জায়গায় একসময় বসবাস করতো বলে জানা গেছে।
এদিকে মঙ্গলকোটের শিমুলিয়া গ্রামের ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে অনুসন্ধান চালিয়ে একটি সুড়ঙ্গপথ ও গোপন কুঠুরির সন্ধান পেয়েছে এন আই এ। সূত্রের খবর, এই সুড়ঙ্গের পরীক্ষার জন্য আসতে পারে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত এন এস জি কমান্ড।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গোপন কুঠুরির মধ্যে চারপাশে বালির বস্তা রেখে তার মধ্যে অস্ত্র চালনা শিক্ষার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
কিন্তু গ্রামের মধ্যে একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এত দিন ধরে জঙ্গি কার্যকলাপ চললেও কেন সেটি পুলিশ বা গ্রামবাসীর চোখে পড়েনি সেটি নিয়ে যথেষ্ট ধন্ধে এন আই এ।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা লালাগোলাতেও একটি সন্দেহজনক ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হানা দেয় এন আই এ-এর গোয়েন্দারা। বর্ধমান বিস্ফোরণের পর থেকে এই ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিও বন্ধ। এর সঙ্গে যুক্তরা পালিয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
গোয়েন্দারা মনে করছেন, আগামী দিনে রাজ্যের আরও বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি ঘাঁটির সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৪