ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

জমে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচনী প্রচার

রক্তিম দাশ. সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১১

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচনী প্রচার জমে উঠেছে। রাজ্যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলার জন্য মাইক বাজানোর নিষেধাজ্ঞা চলবে ১৩ মে পর্যন্ত।

তাতে কী! মিষ্টি, ছাতা, শাড়ি, টি শার্ট, চাবির রিং-এ নির্বাচনী মার্র্কা আর ছড়া, স্লোগান, এসএমএস, ফেসবুকে চলছে ভোটের প্রচার। রাজনৈতিকদলগুলোর এই বর্ণিল প্রচার নির্বাচনে যোগ করেছে নতুন মাত্রা।

ভোটের বাজারে হঠাৎই কদর বেড়ে গেছে বাঙালি অতি প্রিয় সন্দেশের। তার প্রমাণ পাওয়া গেল উত্তর ২৪ পরগণা জেলার অশোকনগরে কমল সাহার মিষ্টির দোকানে। ভোটের প্রচার তুঙ্গে উঠতেই তিনি বানিয়ে ফেলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিকদলের মার্কা দেওয়া সন্দেশ। তার দোকানে দেদার বিক্রি হচ্ছে এ সন্দেশ।

৫০ গ্রাম ওজনের ঘাসফুল, কাস্তে হাতুড়ি বা হাত মার্কা সন্দেশ বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ১০ রুপি দামে। এক কেজি ওজনের একটি সন্দেশের দাম পড়ছে ৫০০ রুপি। এরই মধ্যে কমল সাহার দোকানে কাস্তে হাতুড়ি মার্কা ৬০টি আর ঘাসফুল মার্কা ৪১টি সন্দেশ বিক্রি হয়ে গেছে। সিপিএম, তৃণমুলের কর্মীরা এতে বেজায় খুশি হলেও হাত মার্কা সন্দেশ কম বিক্রি হওয়ায় কিছুটা হতাশ কগ্রেস কর্মীরা। এমনটাই মত কমল সাহার।

কলকাতার বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার মোনাপালি তার ফ্যাশন হাউজে বিক্রি করা শুরু করেছেন মার্কা আকা শাড়ি আর টি-শার্ট। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এবার প্রথম বানালাম। আর বানাতেই হিট। অনেকেই এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন, আবার অর্ডার দিচ্ছেন।

কলকাতার বড়বাজার এবার সরগরম নির্বচনী উপকরণ বিক্রিতে। রাজনৈতিকদলগুলোর মার্কা সম্বলিত পতাকার পাশাপাশি ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে চাবির রিং, ছাতা, টি শার্ট আর শাড়ি। একই দোকানে বিভিন্ন রাজনৈতিকদলের মার্কার সহাবস্থান অবাক করার মতো।

বড়বাজারের বিক্রেতা সুলতান আলম বাংলানিউজকে বলেন, চাবির রিং ৩-৫ রপি, পতাকা-১৫ রুপি, ছাতা-৫০ রুপি, টিশার্ট-১০০রুপি আর শাড়ি ২০০-৫০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। সব রাজনৈতিকদলই কিনে নিয়ে যাচ্ছে তাদের কর্মী সমর্থকদের উপহার দেওয়ার জন্য।

ভোটের প্রচারে ছড়া, স্লোগান আর কার্টুনের ব্যবহারে কলকাতার দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে। ৬০ এর দশক থেকেই এই রেওয়াজ চলছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। যা হয়েছে তা হল দেওয়াল লিখন থেকে এবার তা হাইটেক প্রচারে চলে এসেছে। এসএমএস আর ফেসবুক সহ সব সোস্যাল নেটওর্য়াকিং সাইট এখন ভোট যুদ্ধ চালানোর বড় হাতিয়ার। তাই এ সব ছড়া আর কার্টুন আপলোড করে নেটে চলছে ব্যাপক প্রচার।

তৃণমুল লিখছে-‘খুনি বুদ্ধ বাংলা ছাড়ও’, অন্যদিকে সিপিএম লিখছে- ‘এযুগের হিটলার আর কত রক্ত চাও?’ তবে ছড়ার বাজারে বাম দলগুলো বরাবরই এগিয়ে। মাওবাদী-তৃণমুল আঁতাতের অভিযোগ করে এবারে শোনা যাচ্ছে- ‘ঠা-া ঠা-া কুল কুল-ধ্বংস হবে তৃণমুল’, ‘কালিঘাটের আটচালা-মাওবাদীদের পাঠশালা’। কংগ্রেসের সঙ্গে জোটকে কটাক্ষ করে-‘কাকঁড়া বিছের দুটি হুল-কংগ্রেস আর তৃণমূল’, ।

বামফ্রন্ট আবার আসছে এই প্রত্যয় নিয়ে ছড়া-‘দিদি তুমি কেঁদোনা-বাংলা তোমায় দেব না’, ‘একে একে এগারো-বামফ্রন্ট আবারো’।

তৃণমুলের মিছিলে পাল্টা স্লোগানে আওয়াজ উঠছে- ‘১৩মে আসছে দিন-বামফ্রন্টের মৃত্যুদিন’, ‘জনগণের সরকার- মা, মাটি, মানুষের দরকার’।  

ভারতীয় সময়: ১০৩০ ঘন্টা, মার্চ ৩০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।