কলকাতা: এ বছর সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পাচ্ছেন বাংলা ভাষার বিশিষ্ট কবি উৎপল কুমার বসু। ‘পিয়া মন ভাবে’ কাব্য গ্রন্থের জন্য এ পুরস্কার পাচ্ছেন তিনি।
বর্ষিয়ান কবি উৎপল কুমার বসু তার কবিতা-যাত্রা শুরু করেন পঞ্চাশের দশকে। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘চৈত্রে রচিত কবিতা’ প্রকাশিত হয় ১৯৫৬ সালে।
তখন থেকেই নিজস্ব কাব্যভাষা, প্রকাশভঙ্গি এবং আঙ্গিকের জন্য তিনি বিশিষ্ট হয়ে ওঠেন। তার কলমে বাংলা কবিতা রোমান্টিকতার যাবতীয় পথ ছেড়ে এক অদ্ভূত বস্তুবাদী পর্যবেক্ষণের দিকে চলতে থাকে। ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয় তার বিখ্যাত কবিতার বই ‘পুরী সিরিজ’৷ ’৭০-এ বেরোয় ‘নরখাদক’৷ ১৯৭৮ সালে ‘আবার পুরী সিরিজ’৷
১৯৩৯ সালে ভবানীপুরে জন্মগ্রহণ করেন উৎপল কুমার বসু। স্কুলজীবন বহরমপুর এবং দিনহাটায়। পড়াশোনা করেছেন ভূতত্ত্ব নিয়ে। চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন ইউরোপ ভ্রমণে।
এর আগে কলকাতায় তার সঙ্গে আলাপ হয় বিশিষ্ট মার্কিন কবি অ্যালান গিনসবার্গের। এক নিবিড় এবং দীর্ঘস্হায়ী সখ্য গড়ে ওঠে দুই কবির মধ্যে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিবিড় ভ্রমণের মধ্য দিয়ে তার কবিতা এক নতুন মাত্রা পায়।
কবিতাকে তিনি এক অদ্ভুত ও সংক্ষিপ্ত চেহারা দিতে থাকেন, যা প্রকৃতির নিবিড় পর্যবেক্ষণে সমৃদ্ধ। তার ‘পুরী সিরিজ’-এর কবিতা এভাবেই তাকে বাংলা কবিতায় বিশিষ্ট করে দেয়। তরুণ প্রজন্মের কাছে উৎপলকুমার বসু হয়ে ওঠেন বাংলা কবিতার এক মাইলফলক।
বাঙলা কবিতার ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ ‘হাংরি জেনারেশন’-এর সঙ্গে উৎপল কুমার বসুর সখ্যতা। কবিতায় অশালীনতার অভিযোগও উঠেছে উৎপল কুমার বসুর বিরুদ্ধে।
কবি উৎপল কুমার বসুর কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে ‘তুসু আমার চিন্তামণি’, ‘মীনযুদ্ধ’, ‘বক্সিগঞ্জে পদ্মাপারে’, ‘অন্নদাতা জোসেফ’, ‘সুখদুঃখের সাথী’, ‘সকাল এগারোটার রোদ্দুর’। এছাড়াও প্রকাশিত হয়েছে ‘উৎপল কুমার বসুর গদ্য সংগ্রহ’।
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লিতে সাহিত্য আকাদেমির এক অনুষ্ঠানে কবির হাতে তুলে দেওয়া হবে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার।
বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৪