কলকাতা: চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশিদের বড় আস্থার জায়গা ভারতের কলকাতা। প্রতিদিন প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশি পাড়ি জমান দেশটিতে।
মূল সমস্যা আবাসিক হোটেলগুলিতে থাকার জায়গা পাওয়া নিয়ে। বড় দিনের আগে থেকে সমস্যা শুরু হলেও বর্তমানে এই সমস্যা বেড়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
অনেকেই হোটেলে জায়গা না পেয়ে শীত ও নিরাপত্তহীনতা সঙ্গী করে রাস্তায় রাত কাটাচ্ছেন। কেউ আবার শ্যামলী ও সোহাগ পরিবহনের কাউন্টারের সোফা অথবা চেয়ারে কোনো রকম গা এলিয়ে রাত কাটাচ্ছেন বলেও জানা যায়।
যারা রোগী নিয়ে গেছেন তারা পড়েছেন সবচেয়ে বেশি বিপাকে। আত্মীয়-স্বজনরা রোগী সঙ্গে নিয়ে কলকাতার এক হোটেল থেকে অপর হোটেলে ঘুরে বেড়িয়েছেন রাত বিরাতে। কলকাতার পরিচিতদের ফোন করেও সমস্যার সমাধান করতে পারছেন না তারা।
পারবেনই বা কীভাবে? হোটেলে তো ঘর খালি নেই। অভিযোগ পাওয়া গেছে, সাধারণ সময় যে রুমগুলি ৩৫০-৫০০ রুপি ভাড়া নেওয়া হয় সেগুলি বর্তমানে দৈনিক ১৫০০-১৭০০ রুপি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
কলকাতার পার্ক স্ট্রিট অঞ্চলের হোটেলগুলিতে ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখ থেকে জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত কোনো অগ্রিম বুকিং নেওয়া হচ্ছে না।
পরিস্থিতি এমন, বেশি অর্থ দিয়েও হোটেল থাকার জায়গা পাচ্ছেন না অনেকেই।
এই অবস্থা শুধু পার্ক স্ট্রিট, মারকুইস স্ট্রিট, সদর স্ট্রিট সংলগ্ন অঞ্চলেই নয়, কলকাতার যেসব অঞ্চলে আবাসিক হোটেল বা গেস্ট হাউজ রয়েছে সেগুলিতেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কোনো ঘর খালি নেই।
একমাত্র পাঁচতারকা হোটেলগুলিতে ঘর খালি রয়েছে। এই পরিস্থিতির কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, বড় দিন উপলক্ষে প্রচুর সংখ্যক বিদেশি ইউরোপ, আমেরিকাসহ অন্য দেশ থেকে কলকাতায় এসেছেন। প্রতিবেশী দেশগুলোর মানুষও কম নয়।
কলকাতার সব হোটেল বা গেস্ট হাউজে বিদেশিদের থাকার অনুমতি নেই। তাই যেসব হোটেল বা গেস্ট হাউজে অনুমতি রয়েছে সেখানে তিল ধারণের ঠাঁই নেই।
এছাড়া বর্ধমান বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর বেআইনি গেস্ট হাউজগুলিতে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। ফলে চাহিদার তুলনায় স্থান সঙ্কুলান করা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ থেকে আসা রোগী ও পর্যটকরা জানান, আগে থেকে এই সমস্যার আঁচ করতে পারলে তারা এসময় আসতেন না।
হোটেলগুলির কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন তারা যথাসম্ভব চেষ্টা করছেন কিন্তু কোনোভাবেই চাহিদা অনুযায়ী জোগান দিয়ে উঠতে পারছে না।
মারকুইস স্ট্রিটের হোটেল সম্রাট, হোটেল ওরিয়েন্ট, হোটেল ম্যাজেস্ট্রিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছর ঈদের সময় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও এবার বড়দিনে হঠাৎ করে দেখা দিলো এমন পরিস্থিতি। ইউরোপ ও জার্মানির পর্যটকরা এবার বেশি এসেছেন। ফলে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আসা নাগরিকরা বিপাকে পড়ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৪