কলকাতা: বামেদের মা, মাটি, মানুষের স্লোগানকে কটাক্ষ করা নিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, যারা মা মাটি মানুষকে অবজ্ঞা করে তাদের আর একটিও ভোট নয়।
সেই সঙ্গে তিনি এও বলেন, কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের বিরুদ্ধে কোনও প্রার্থীকে ভোট দেওয়া মানে সিপিএম’র হাতকে শক্ত করা।
উত্তরের জেলাগুলোতে ‘মা মাটি মানুষ’র স্লোগান নিয়ে শেষ পর্যায়ের নির্বাচনী প্রচারণায় মমতা এখন ব্যস্ত। গত সোমবার তপন বিধানসভা কেন্দ্রের এক নির্বাচনী সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
এদিকে ভোটের আর মাত্র ৬দিন। তারপরেই অনুষ্ঠিত হবে রাজ্যের প্রথম দফার নির্বাচন। হাইভোল্টেজ এ নির্বাচনে শাসক দল সিপিএমকে উৎখাত করতে মরিয়া বিরোধী কংগ্রেস-তৃণমূল জোট।
যতই জোটবিরোধী গোঁজ প্রার্থীরা ভোটে লড়ুন তাদের পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। উত্তরের জেলা সফরে এ বার্তাই তিনি দিচ্ছেন।
মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর দিনাজপুর, জলাপইগুড়িতে তার সভায় কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক ছাড়াই ব্যাপক জনসমাগম শাসক দল সিপিএমকে চিন্তায় ফেলেছে।
প্রতিটি জনসভায় কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী মমতা তার কাজের খতিয়ান তুলে ধরে বামফ্রন্টের ৩৪ বছরের শাসনকে তুলোধুনা করছেন।
বন্যাপ্রবণ ও নদী ভাঙনের সমস্যা জর্জরিত এ জেলাগুলোর মানুষ জনের কাছে মমতা তার বক্তব্যে বলছেন, সিপিএম গত ৩৪ বছরে কিছুই করেনি। কেন এই জেলাগুলোতে শিল্প হয়নি? রাজ্যে মা মাটি মানুষের সরকার হলে এখানেও শিল্প হবে।
তার স্পষ্ট ঘোষণা, কোনওভাবেই কৃষি জমি নিয়ে শিল্প হবে না।
তপন বিধানসভা কেন্দ্রের প্রচারে মাত্র ২৩ মিনিটের ভাষণে তিনি বলেন, রেলপ্রকল্প নিয়ে সিপিএম রাজনীতি করেছে।
উত্তরবঙ্গে চালু করা রেলের পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, কোনও কিছুই না পেয়ে যদি এত কাজ করতে পারি, তাহলে কিছু পেলে তো অনেক কিছুই করতে পারবো। ক্ষমতায় এলে দেখিয়ে দেব উন্নয়ন কীভাবে করতে হয়।
তপসিলি জাতি-উপজাতি ও সংখ্যালঘুদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজ্যের শাসক দল এদের জন্য কিছুই করেনি। ক্ষমতায় এলে সংখ্যালঘুদের জন্য সাচার কমিটির সুপারিশ কার্যকর করা হবে।
বালুরঘাটে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে মমতা বলেন, হিলির মতো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্রর কোনও উন্নয়ন হয়নি বামশাসনে।
সফরে মমতার বক্তব্যে ওঠে এসেছে বার বার উত্তরে জেলায় নতুন একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের কথা, সেচের উন্নয়ন ও পাট শিল্প প্রসারের কথা।
উত্তরের জেলাগুলো বরাবর কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেখানে মমতার একক ক্যারিশমায় প্রতিটি জনসভায় ব্যাপক জনসমাগম কি নতুন কোনও বার্তা আনছে কি-না সেটা দেখার জন্য ১৩ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১১