ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

উত্তরের জেলাগুলোতে নির্বিঘ্নে ভোট শেষ হল

রক্তিম দাশ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১১
উত্তরের জেলাগুলোতে নির্বিঘ্নে ভোট শেষ হল

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোট সোমবার শুরু হয়েছে। উত্তরের ৬টি জেলার ৫৪টি আসনে এদিন নির্বিঘ্নে ভোট শেষ হয়েছে।



সকাল ৭টা থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল ৫টায়। তবে অনেক কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনেক ভোটার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে ভোট শেষ হতে রাত হয়ে যাবে।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে জানা গেছে, বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭৪ দশমিক ১২ শতাংশ।

ভোট চলাকালীন ১২০টি বৈদ্যুতিন ভোট যন্ত্র খারাপ হয়ে যায়। তবে দ্রুততার সঙ্গে এসব যন্ত্র বদলে দিয়ে ভোট পর্ব সমাধা করা হয়।

ইসি আরও জানায়, দুয়েকটি ঘটনা ছাড়া প্রথম দফার ভোট গ্রহণ নির্বিঘেœ শেষ হয়েছে।

উত্তরের জেলাগুলোর এ ৫৪টি কেন্দ্রের ফলাফলের দিকে নজর রাখবে সব রাজনৈতিক দলই। প্রকৃত পক্ষে বামফ্রন্ট বা তৃণমূল জোট যারাই এখানে বেশি আসন পাবে তারাই অনেকখানি এগিয়ে যাবে রাজ্যের ক্ষমতা দখলের দিকে। এ ভোটে আদিবাসী, নেপালি ও সংখ্যালঘুদের ভোট একটা বড় ভূমিকা নেবে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

৫৪টি কেন্দ্রে মোট ৯৭ লাখ ৫২ হাজার ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। মোট বুথের সংখ্যা ১২ হাজার ১৩১টি। এজন্য নিয়োগ করা হয়েছে ৬২ হাজার ৫০০ ভোটকর্মী।

নিরাপত্তা রক্ষায় ৫৩৯ কোম্পানি আধা সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল।

দার্জিলিং জেলার ১৬ টি দুর্গম বুথে শনিবার রাতেই ভোট কর্মী পৌঁছে যান। এর মধ্যে রয়েছে ১৪টি কার্শিয়াংয়ে ও ২টি দার্জিলিংয়ে।

ভোট নির্বিঘœ করতে শনিবার সন্ধ্যা থেকে উত্তরের লাগোয়া নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ হিলি স্থলবন্দর বন্ধ ছিল। সীমান্তে বিএসএফ ও সীমা সুরক্ষা বল বিশেষ অবস্থান নিয়েছে।

ব্যাপক উৎসাহের মধ্য দিয়ে উৎসবের আমেজে ভোট হয় সর্বত্র। বহু মানুষ ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছেন।

জানা গেছে পাহাড়ে এখন পর্যন্ত কোনও অশান্তির খবর নেই। প্রতিটি বুথেই সুভাষ ঘিসিংয়ের দল জিএনএলএফ ও সিপিএম তাদের পোলিং এজেন্ট দিতে পেরেছে।

জলপাইগুড়ি জেলার চা বাগানগুলোতে ভোটের হার ভালো। এখানে সকালেই ১৭ শতাংশ ভোট পড়ে।


এদিন ভোট দিয়েছেন শিলিগুড়িতে রাজ্যের পুরমন্ত্রী সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য, মালদায় কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরী, কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নূর।

পাহাড়ের দার্জিলিং শহরে ভোট দেন জিএনএলএফ নেতা সুভাষ ঘিসিং ও জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। দিনাজপুরের গোয়ালপোখর কেন্দ্র ভোট দেন কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সি।

সকালে জলপাইগুড়ি, মালদা, দার্জিলিং ও দক্ষিণ দিনাজপুরে কয়েকটি বৈদ্যুতিন ভোট যন্ত্র খারাপ বের হলে সঙ্গে সঙ্গে তা বদলে দেওয়া হয়।

ইসির কাছে প্রথম ১ ঘণ্টায় দু’টি অভিযোগ জমা পড়েছে।

এর একটি করেছেন কোচবিহার জেলার দিনহাটার তৃণমূল জোট প্রার্থী এনসিপির অমিয় সরকার।

তিনি অভিযোগ করেছেন, তার কেন্দ্রে ফরওয়ার্ড ব্লকের কর্মীর দলীয় মার্কা সিংহ লাগানো ব্যাজ পড়ে ভোট দিচ্ছেন।

এছাড়া কোচবিহারের নাটাবাড়িতে সিপিএম অভিযোগ করেছে, ভোটারদের তৃণমূল কর্মীরা বাধা দিচ্ছে। এ নিয়ে সেখানে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

এ দু‘টি ঘটনা ছাড়া এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনও অশান্তি খবর নেই।

ওই জেলারই শীতলকুচিতে তৃণমূলের একটি বেআইনি ক্যাম্প অফিস ভেঙে দেয় সিআরপিএফ। এখানে অশান্তি শুরু হলে তারা লাঠিচার্র্জ করলে দু’জন আহত হন।

অন্যদিকে, মালদা মহিলা কলেজে রাজ্যের মন্ত্রী শৈলেন সরকারের ছবি তুলতে গেলে আধা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে কর্তব্যরত সাংবাদিকদের বচসা হয়।

 এদিন ৫৪টি কেন্দ্রের মধ্যে বেশ কয়েকটি নজরকাড়া কেন্দ্র রয়েছে।

শিলিগুড়িতে রাজ্যের পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, কোচবিহারের মাথাভাঙায় বনমন্ত্রী অন্তত রায়, আলিপুরদুয়ারে পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী, উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারে অসামরিক প্রতিরক্ষামন্ত্রী শ্রীকুমার মুখার্জি, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে সমাজকল্যাণমন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরী ও মালদা রতুয়া কেন্দ্রে আছেন পরিবশেমন্ত্রী শৈলেন সরকার ছাড়াও কংগ্রেস নেতা দেবপ্রসাদ রায় ও তৃনমূলের দার্জিলিং জেলার সভাপতি গৌতম দেবের ভাগ্য নির্ধরিত হল।

রাজ্যে প্রথমপর্বের ভোট সুষ্ঠুভাবে শেষ হওয়ার জন্য শাসকদল সিপিএম ও বিরোধী দল তৃণমূলের পক্ষ থেকে রাজ্যবাসীকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।


বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।