কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের ৩টি জেলার ৭৫টি বিধানসভা আসনে তৃতীয় দফার ভোট গ্রহণ করা হবে বুধবার। এদনি মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যসহ একাধিক তারকা প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারিত হবে।
ইসি জানিয়েছে, ভোটের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ভোটকর্মীরা প্রতিটি বুথে পৌঁছে গেছেন।
এই ভোটে সর্বমোট প্রার্থী রয়েছেন ৪৭৯ জন। এর মধ্যে ৪৬ জন নারী। ৯৭.৪৭ শতাংশ ভোটারের পরিচয়পত্র রয়েছে। যাদের নেই তাদের বিকল্প পরিচয়পত্র নিয়ে যেতে হবে।
ইসি আরও জানিয়েছে, প্রতিটি বুথের ১০০ মিটারের বাইরে রাজনৈতিক দলগুলি ক্যাম্প অফিস করতে পারবে। সেখানে যারা বসবেন, তাদের সেই এলাকার ভোটার হতে হবে।
সতের হাজার ৭৯২টি বুথের প্রতিটিতে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বুথের ভেতরে থাকবেন মাইক্রো অবজারভার। প্রিসাইডিং অফিসারকে প্রতি মুহূর্তে এসএমএস করে খবরাখবর জানাতে হবে।
থাকাছে ডিজিটাল ক্যামেরা ও সিসি ক্যামেরা। ২০০টি বুথ থেকে ওয়েব কাস্টিং করা হবে। যাতে ইসি বুথের ভেতরে ও বাইরের ছবি দেখতে পারে। এমনকি বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে যে ভোট পড়ছে তার শব্দও শোনা যাবে।
জেলার সাত হাজার ৪৯৭টি বুথের মধ্যে এক হাজার ৬৩৮টি বুথ ঝুঁকিপূর্ণ। ২৭৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি ১৪ হাজার রাজ্য পুলিশের বাহিনী থাকছে ভোটের নিরাপত্তায়। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার পুলিশ কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে।
রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ১১ হাজার জামিন অযোগ্য অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভোট চলাকালিন বা তার আগে কেউ এসএমএসে প্রচার করলে তার বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রশাসন।
এদিকে, কলকাতায় ভোটের জন্য ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কলকাতা পুলিশ। মহানগরীর ৪৮টি থানা এলাকার দুই হাজার ৭২২টি বুথের নিরাপত্তার জন্য ৭০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ১৬ হাজার ৫০০ পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।
কলকাতা পুলিশের সব ছুটি বাতিল করা হয়েছে। লালবাজারে পুলিশ সদর দফতরের কনট্রোল রুমের নিয়ন্ত্রণে থাকবে ৩টি স্যাটেলাইট কনট্রোল রুম। ভোটের দিন কোনো সমস্যা হলে তিনটি মোবাইল নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে। অভিযোগ পেলেই সেখানে ছুটে যাবে পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা।
এ্বারের ভোটে কলকাতার ৩৫৫টি বুথ অতি ঝুঁকিপূর্ণ। নয়টি স্ট্রংরুমে ভোটযন্ত্র থাকবে। এর নিরাপত্তায় থাকছে ২১ কোম্পানি পুলিশ। ১৪০টি মোবাইল ভ্যান কলকাতার সড়কগুলিতে টহল দেবে।
এর মধ্যে ৮৩টি স্ট্রাইকিং মোবাইল ভ্যান থাকছে। ২২২টি পুলিশ পিকেট বসানো হচ্ছে। বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না।
এদিন মোট এক কোটি ৪৪ লাখ ৫৫ হাজার ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
তারকা প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন যাদবপুর কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বামফ্রন্টের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, কানিং পূর্ব কেন্দ্রে মন্ত্রী আবদুর রেজ্জাক মোল্লা, রায়দিঘি কেন্দ্রে মন্ত্রী কান্তি গাঙ্গুলি, খড়দহ কেন্দ্রে অর্থমন্ত্রী ড. অসীম দাশগুপ্ত, দমদম কেন্দ্র আবাসনমন্ত্রী গৌতম দেব, এন্টালি কেন্দ্রে তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী ড. দেবেশ দাস, বেলেঘাটা কেন্দ্রে মন্ত্রী অনাদী সাহু।
এছাড়াও পরিবহনমন্ত্রী রঞ্জিত কুন্ড, নারী উন্নয়নমন্ত্রী রেখা গোস্বামী, সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর, মাদ্রাসা ও সংখ্যালঘুমন্ত্রী ড. আবদুস সাত্তার ও বির্পযয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী ড. মোর্তাজা হুসেনের ভাগ্য নির্ধরিত হবে এদিন।
অন্যদিকে, তৃণমূলের উল্লেখ্যযোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বিরোধী দলনেতা পার্থ চ্যাটার্জি, কলকাতার মেয়র শোভন চ্যাটার্জি, সাবেক মেয়র সুব্রত মুখার্জি, চিত্রতারকা চিরঞ্জিৎ, দেবশ্রী রায়, সাবেক আমলা মনীশ গুপ্ত, নাট্যকার ব্রাত্য বসু প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১১