কলকাতা: আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বামদের প্রচারের সারথি হতে পারেন পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আর প্রচার প্রক্রিয়াকে তীক্ষ্ণ করতে মাঠে নামতে পারেন কানাইয়া।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনকে প্রায় ‘ধর্ম যুদ্ধ’ হিসেবেই দেখছে সিপিএম। আর এই ভোট যুদ্ধের কুরুক্ষেত্রে প্রচারের প্রথম সারিতে থাকবেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আর জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত বাম ছাত্র নেতা কানাইয়া কুমার।
কানাইয়া সিপিআই দলের ছাত্র সংগঠনের নেতা হলেও পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন প্রচারে তিনি বামফ্রন্টের প্রচারের মুখ হয়ে উঠবেন। তবে বিহারের বেগুসরাইয়ের কৃষক পরিবারের এ ছাত্রনেতা বর্তমানে ভারতে কিছুটা স্তিমিত থাকা বাম আন্দোলনের নতুন মুখ হিসেবে উঠে আসছেন- সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
২০১১ সালের ভারতের লোকসভা ভবনে হামলার অন্যতম অভিযুক্ত আফজাল গুরুর ফাঁসি নিয়ে আলোচনা চলাকালীন তাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। এর পরেই আগুনের ফুল্কির মতো ছড়িয়ে পড়তে থাকে এ তরুণ ছাত্রনেতার নাম। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন ভারতের বাম আন্দোলনের মরা গাঙে নতুন ঢেউয়ের নাম কানাইয়া কুমার।
যদিও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কানাইয়া কুমার জানিয়েছেন তিনি দিল্লিতে ছাত্রদের সমস্যা নিয়েই আন্দোলনে মন দিতে চান। তবে দল ডাকলে তিনি পশ্চিমবঙ্গে প্রচারে আসতে রাজি। এই সুযোগ পশ্চিমবঙ্গের বাম নেতারা কোনোভাবেই ছাড়তে রাজি হবেন না। কারণ গোটা ভারতের তরুণদের একটা বড় অংশের কাছে কানাইয়া কুমার বেশ জনপ্রিয়।
বাম প্রচারকদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় মুখ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই খুব পরিশ্রমসাধ্য কাজগুলি থেকে দূরে থাকছেন। কিন্তু শোনা যাচ্ছে ২০১৬-এর নির্বাচনের প্রচারে প্রথম সারিতে থাকার দলের অনুরোধ ফেলতে পারেননি এই বরিষ্ঠ বাম নেতা। দলের কঠিন সময়ে তিনি ময়দানে নামার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
সঙ্গেই আছেন সিপিএম–এর পশ্চিমবঙ্গের সম্পাদক সূর্য কান্ত মিশ্র, বাম কর্মী-সমর্থকদের পছন্দের তালিকায় আছেন কলকাতা জেলার নেতা গৌতম দেব, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার নেতা সুজন চক্রবর্তী প্রমুখ।
পশ্চিমবঙ্গের ভোটারদের হাতের তালুর মতো চেনেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি জানেন কোথায় কীভাবে রণনীতি পরিচালনা করতে হয়। তাই তরুণ নেতা কানাইয়াকে তিনি পথ দেখাতে পারবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। এছাড়াও ছাত্র রাজনীতির অভিজ্ঞতা আছে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর। তাই ছাত্রনেতার চিন্তা ভাবনার বিষয়টিও সহজে বুঝতে পারবেন তিনি। তাই তার হাতেই দায়িত্ব পড়তে পারে কানাইয়া কুমারের পশ্চিমবঙ্গের প্রচারের পথ প্রদর্শক হিসেবে। সেই সম্ভাবনাও প্রবল।
বুদ্ধ-কানাইয়া জুটিকে প্রচারে নামাতে পারলে ভোটারদের মন জয় করতে অনেকটাই সুবিধা হবে সে কথা বিলক্ষণ বুঝেছেন বাম নেতারা। তাই তারা চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন দেখার পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে বামদের এই নতুন প্রচার কৌশল।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, ০৭ মার্চ , ২০১৬
ভিএস/এএ