আন্তর্জাতিক নারী দিবসে কলকাতার রাস্তায় হাঁটলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট সামনে তাই মিছিলে স্লোগানও হলো।
খবরটি বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ধর্ষণ সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন করেন সাংসদ বি সেনগুত্তুভান। ঘটনাচক্রে মঙ্গলবার বিশ্ব নারী দিবসের দিনে সংসদে প্রশ্নটির উত্তর দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হরিভাই প্রতিভাই চৌধুরী। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, গত দু’বছরে (২০১২-১৪) গোটা ভারতে ধর্ষণের মামলায় এক নম্বরে স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
পত্রিকাটি তার বিশ্লেষণে জানায়, এক সময়ে বানতলা বা ফুলবাগানের মতো ঘটনাগুলি পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে কালো আঁচড়ের দাগ হয়ে রয়েছে। ক্ষমতা বদলের পরে অনেকেই ভেবেছিলেন, পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে। কিন্তু পার্কস্ট্রিট থেকে কামদুনি—মহিলাদের উপর নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, নারী নির্যাতন রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মনোভাব নিয়েও। এই সময়েই উঠে এল রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে এমন তথ্য। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ১৬৫৬টি ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিহার। সেই রাজ্যে ওই সময়ে নথিভুক্ত ধর্ষণের ঘটনা ৪৮৪টি।
এ বিষয়ে তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের মন্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রতিটি ধর্ষণের ঘটনাই অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু মহিলারা এখন অন্তত অত্যাচারের ঘটনা নির্ভয়ে থানায় জানাচ্ছেন। যা আগে সম্ভব ছিল না। সেই কারণে সংখ্যাটা এত বড় লাগছে। ’’
ডেরেকের মতে, ‘‘বিহার ও উত্তরপ্রদেশে প্রকৃত সংখ্যা হয়তো দশ গুণ বেশি হবে। কিন্তু সেখানে ভয়ে কেউ থানায় যায় না। ’’
তবে তৃণমূল নেতার যুক্তিকে হাস্যকর বলেই মনে করেছেন সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দাবি, রিপোর্ট খুঁজেই দেখা যাক না, কত জন অপরাধী শাস্তি পেয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যে ধর্ষণের ঘটনায় ১৮৪৮ জন গ্রেফতার হলেও, দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন মাত্র ৫৭ জন। এ ক্ষেত্রে গোটা দেশে ২৮তম স্থান পেয়েছে রাজ্য।
ঋতব্রতের কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ এখন গোটা দেশে ধর্ষণের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে। জঙ্গলের শাসন চলছে। মহিলারা সব চেয়ে অ-সুরক্ষিত। ’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনকে নিয়ে সিপিএম সাংসদের মন্তব্য, ‘‘সরকার অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। কাটোয়ায় একজনও ধরা পড়েনি। অভিযোগ উঠেছে, পার্কস্ট্রিট কাণ্ডে মূল অভিযুক্তকে তৃণমূলই নাকি পালাতে সাহায্য করেছে। সরকার যেখানে সমাজবিরোধীদের প্রশয় দেয়, সেখানে এমন ফলই হয়। ’’
অবশ্য বিরোধীদের যুক্তি খারিজ করে ডেরেক বলছেন, ‘‘মনে রাখতে হবে, তাপসী মালিকের পরিবার বিচার পায়নি, কিন্তু কামদুনি পেয়েছে। ’’
বাংলাদেশ সময় ০৯৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১৬
এমএমকে